২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত

ইব্রাহিম আকিল
ছবি : রয়টার্স

ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইব্রাহিম আলিক নামের হিজবুল্লাহর এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের শহরতলিতে ইসরায়েল এ বিমান হামলা চালায়।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আকিলের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। কিন্তু হিজবুল্লাহ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেনি।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তথ্যমতে, বৃহস্পতিবারের ওই হামলায় ১২ জন নিহত ও ৬৬ জন আহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আকিল ছাড়া বাকি ১১ জনের মধ্যে ১০ জনই হিজবুল্লাহর বিভিন্ন পর্যায়ের কমান্ডার বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।

নিহত আকিল হিজবুল্লাহর অভিজাত ‘রাদওয়ান বাহিনীর’ জ্যেষ্ঠ নেতা ছিলেন। হামলার সময় তিনি একটি বৈঠকে ছিলেন। হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের বৈঠকটি চলছিল।

ইসরায়েলের হামলায় দুটি ভবন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একসময় যেখানে একটি ভবন ছিল, সেখানে এখন কেবল ধূসর ধ্বংসস্তূপ। ঘন ধুলোর আস্তরণে আশপাশের রাস্তা ও গাড়ি ঢেকে যাচ্ছে। ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন লেবাননের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

গত মঙ্গল ও বুধবার হিজবুল্লাহর সদস্যেদের ব্যবহার করা কয়েক হাজার তারহীন যোগাযোগযন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকিতে একযোগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ৩৭ জন নিহত ও ৩ হাজার মানুষ আহত হন। এত বড় ধাক্কার পরপরই আকিলসহ অন্য কমান্ডারদের হারিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছে হিজবুল্লাহ।

তা ছাড়া দুই মাসেরও কম সময় আগে গত জুলাইয়ে হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করেছিল ইসরায়েল। ফুয়াদ শুকর নামেও ওই কমান্ডার হিজবুল্লাহর সামরিক শাখার শীর্ষ দায়িত্বে ছিলেন। ইরানের সহায়তাপুষ্ট লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সামরিক শাখায় শুকরের পর আকিলকে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ধরা হতো।

১৯৮০–এর দশকে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন আকিল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, লেবাননের বাইরে অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতেন আকিল। হিজবুল্লাহর অন্য জ্যেষ্ঠ সামরিক নেতাদের মতো আকিলও তেমন একটা জনসমক্ষে বের হতেন না, বা বিবৃতি দিতেন না। 

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, আকিল ‘তাহসিন’ নামেও পরিচিত। ১৯৮৩ সালের এপ্রিলে বৈরুতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে বোমা হামলায় তাঁর ভূমিকা রয়েছে। এ হামলায় ৬৩ জন মানুষ মারা গিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন কর্পস ব্যারাকে হামলায়ও আকিলের ভূমিকা ছিল। এ হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২৪১ মার্কিন সেনা।

এই দুই হামলার দায় স্বীকার করেছিল ইসলামিক জিহাদ অর্গানাইজেশন নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। আকিল ছিলেন এই সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সদস্য।

এসব হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আকিলকে খুঁজছিল যুক্তরাষ্ট্র।

ইসরায়েলের গণমাধ্যম হারেটজ জানায়, গত মঙ্গলবার পেজার বিস্ফোরণে আকিলও আহত হয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছিল।