বিশ্বকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো করে গড়ে তোলার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে: রাইসি
যুক্তরাষ্ট্রের উসকানিতেই ইউক্রেনে সহিংসতা চলছে। ইউরোপ যাতে দুর্বল হয়ে পড়ে, এ জন্যই ইউক্রেন যুদ্ধে মদদ দিচ্ছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চলমান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় এমন অভিযোগ তুলেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বব্যবস্থায় একটা বড় ধরনের বাঁকবদল ঘটছে এবং গোটা বিশ্বকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো করে গড়ে তোলার যে প্রকল্প, তা ব্যর্থ হয়েছে। আত্মপরিচয়ের সংকটে ভুগছে পশ্চিমা বিশ্ব। কার্যত তারা নিজেদের একটি সুশোভিত বাগান আর বাকি বিশ্বকে জঙ্গল মনে করে।’
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা তাঁর সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন ইব্রাহিম রাইসি। একই সঙ্গে দাবি করেন, এ ষড়যন্ত্র তিনি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। রাইসি বলেন, ইরান ও এই বলয়ের দেশগুলোর হাতে বিশ্বের ভবিষ্যৎ। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দিন শেষ হয়ে গেছে।
ইব্রাহিম রাইসির এ বক্তব্যের প্রতিবাদে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাড এরডান। ইব্রাহিম রাইসির উদ্দেশে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত এ সময় বলেন, তেহরানের এই কসাইকে’ স্বাগত জানানোর জন্য জাতিসংঘ লালগালিচা বিছিয়ে রেখেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য তেহরান রাশিয়াকে অস্ত্র দিচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে এ অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রসহ তার পশ্চিমা মিত্রদের। জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে রাইসি বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়েছে ইরান—এই প্রমাণ যদি তাদের কাছে থেকে থাকে, তাহলে তাদের সেসব প্রকাশ করা উচিত।
ইব্রাহিম রাইসি আরও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করতেও প্রস্তুত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের করের অর্থ তো যুদ্ধে ব্যয় করা হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন অস্ত্র ব্যবসায়ীরা।’
রাইসি যখন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন, সেই একই দিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কয়েকজন ইরানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ড্রোন হামলা করার পর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রাশিয়া যুদ্ধের জন্য এসব ড্রোন দিয়েছে তেহরান।