হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ জনসমক্ষে আনল ইরান
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি উন্নত সংস্করণ প্রথমবারের মতো সামরিক প্রদর্শনীতে জনসমক্ষে এনেছে ইরান।
গতকাল রোববার রাজধানী তেহরানে এক সামরিক প্রদর্শনীতে এই ক্ষেপণাস্ত্রকে জনসমক্ষে আনা হয়। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির জন্য এই সামরিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এক মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। চলমান হামলার মধ্যে ইসরায়েলের সমর্থনে এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন প্রেক্ষাপটে সামরিক শক্তির প্রদর্শনী দেখাল ইরান।
গতকাল তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) মহাকাশ বিভাগ পরিচালিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। সেখানেই ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ প্রদর্শন করা হয়।
প্রদর্শনীতে ইরানের তৈরি গাজা ড্রোনসহ অন্যান্য অস্ত্র স্থান পায়। শাহেদ সিরিজের ড্রোনের একটি নতুন সংস্করণ ও ৯-দেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি উন্নত সংস্করণও গতকাল উন্মোচন করা হয়। ৯-দেই ব্যবস্থা স্বল্প থেকে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম।
আইআরজিসি ‘মেহরান’ নামের একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও গতকাল প্রদর্শন করেছে। এটি সলিড-ফুয়েলচালিত ব্যবস্থা।
ইরান গত জুনে প্রথম ‘ফাত্তাহ’ নামের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে। চীন, রাশিয়াসহ গুটিকয় দেশের হাতে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র আছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের যে উন্নত সংস্করণ গতকাল উন্মোচন করা হয়েছে, সেটির নাম ‘ফাত্তাহ ২’। এটি হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল (এইচজিভি) ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র।
গতকাল উন্মোচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়ে আর কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে আগে ইরান বলেছিল, ফাত্তাহ ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পরিসীমার ক্ষেপণাস্ত্র। ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতি সেকেন্ডে ৫ দশমিক ১ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম।
আইআরজিসির কর্মকর্তারা গত জুনে বলেছিলেন, অভিজাত বাহিনীটি এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসীমা ২ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করতে চায়। তা করা গেলে ক্ষেপণাস্ত্রটির পরিসীমার আওতায় ইরানের আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইসরায়েল কার্যকরভাবে চলে আসবে।
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান হামলার জন্য গতকাল ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের আবার নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। ইসরায়েলি হামলায় ইতিমধ্যে ১৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি বলেছেন, জায়নবাদী শাসকেরা জাতিবিদ্বেষের প্রতীক। গাজায় এক মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি হামলায় পশ্চিমা নেতাদের সমর্থনের অর্থ হলো, তাঁরাও জাতিবিদ্বেষে বিশ্বাসী।