ইসরায়েলকে সমর্থন দিলেও ইরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না যুক্তরাষ্ট্র
মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে গতকাল সোমবার ফোনালাপ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। এ সময় ইসরায়েলে ইরানের হামলার প্রেক্ষাপটে তেল আবিবের প্রতি তাঁর দেশের সমর্থন ব্যক্ত করেন তিনি। তবে ওই সংঘাত ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর তিনি জোর দেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। লয়েড অস্টিনের এ ফোনালাপের আগে গত শনিবার ইসরায়েলে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী হামলা চালায় ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ওই দিন ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েক শ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান। তবে অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ভূখণ্ডে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করা হয়।
পেন্টাগন বলেছে, ইসরায়েলে ওই হামলা চালানোর আগে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান কিছু জানায়নি এবং ওয়াশিংটন তেহরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না। ইরানের হামলার পর এর জবাব কেমন হবে, সে বিষয় বিবেচনা করছে ইসরায়েল। এ অবস্থায় সংযম দেখাতে ও আঞ্চলিক সংঘাত বেড়ে যাওয়া এড়াতে ইসরায়েলের ওপর মিত্রদের চাপ বাড়ছে। তবে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান বলেছেন, তাঁর দেশ ইরানি হামলার জবাব দেবে।
পেন্টাগন জানায়, লয়েড অস্টিন গতকাল বাহরাইনের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স সালমান বিন হামাদ আল-খলিফা, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট, জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস ও কাতারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন মোহাম্মদ আল আতিয়াহর সঙ্গে পৃথক ফোনালাপ করেন। আলাপে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েলে ইরানের হামলার নিন্দা জানান এবং বলেন, ওয়াশিংটন সংঘাত বাড়ুক, তা চায় না।
ফোনালাপে অস্টিন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত-উত্তেজনার বৃদ্ধি না চাইলেও আমরা ইসরায়েল ও মার্কিন কর্মীদের রক্ষা করে যাব।’
পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের সঙ্গে আলাপে দেশটিকে রক্ষায় নিজ দেশের সমর্থন ব্যক্ত করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে পুনরায় নিশ্চিত করেন তিনি।
এর আগে পেন্টাগনের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবে কি না, সেটি তাদের বিষয়।’
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার এ উত্তেজনা গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতা মধ্যপ্রাচ্যে আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকে ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যেও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।