ইসরায়েলের আয়রন ডোমকে ফাঁকি দিতে কী ড্রোন দিয়ে হামলা করেছে হিজবুল্লাহ

ইরানের একটি ড্রোনফাইল ছবি: রয়টার্স

হিজবুল্লাহর ড্রোন কীভাবে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারল, তা তদন্ত করছে ইসরায়েল। এই প্রেক্ষাপটে আলোচনা চলছে, ইসরায়েলে প্রাণঘাতী হামলায় হিজবুল্লাহ কী ড্রোন ব্যবহার করেছে।

গত রোববার ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায় ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এই হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আহত ৬০ জনের বেশি।

আরও পড়ুন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সস্তা, শনাক্ত করা কঠিন—এমন আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিমূঢ় করে হামলার কৌশল নিয়েছে হিজবুল্লাহ।

তেল আবিবের ইসরায়েলি ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের (আইএনএসএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ওরনা মিজরাহি সিএনএনকে বলেন, তুলনামূলকভাবে সস্তা, পরিচালনা সহজ—এমন ধরনের ড্রোন শনাক্ত করা ও রুখে দেওয়া ইসরায়েলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার জন্য কঠিন।

এর প্রধান কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিজরাহি বলেন, এ ধরনের ড্রোন আকারে ছোট। খুব হালকা। রাডার তা সহজে শনাক্ত করতে পারে না। ইসরায়েলের রাডারব্যবস্থা যেভাবে বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে, তা সব সময় সেভাবে আকারে ছোট এই ড্রোন শনাক্ত করবে না।

আরও পড়ুন

গত রোববারের হামলায় ঠিক কোন ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে, তা জানায়নি হিজবুল্লাহ। এ ব্যাপারে ইসরায়েলও কিছু বলেনি।

তবে হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা হামলায় বিভিন্ন ধরনের ড্রোন ব্যবহার করেছে। কিছু ড্রোন প্রথমবার ব্যবহার করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিজবুল্লাহ সম্ভবত মিরসাদ ধরনের ড্রোন ব্যবহার করেছে। এটি ইরানে আবাবিল ড্রোন নামে পরিচিত।

ওয়াশিংটন ডিসির ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের সিনিয়র ফেলো বেহনাম বেন তালেবলু বলেন, এই ড্রোন নিচু (কম উচ্চতা) দিয়ে চলে। ধীরগতিতে চলে। এগুলো একমুখী আক্রমণকারী ড্রোন। এতে আনুমানিক ৪০-৫০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড (বিস্ফোরক মুখ) থাকে।

এই ড্রোনের গতিপথ শনাক্ত করা কঠিন বলে জানান মিজরাহি। তিনি বলেন, এই ড্রোনের চলাচলের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা সব সময় থাকে না। এগুলো দিক পরিবর্তন করতে পারে।

মিজরাহি বলেন, ‘আপনি বুঝতে পারবেন না, তারা (ড্রোন) শেষ পর্যন্ত কোথায় যাচ্ছে বা তারা কোথায় আঘাত হানবে।’

আরও পড়ুন

ইসরায়েল তার ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরোধী ব্যবস্থায় বিপুল অর্থ ঢালছে উল্লেখ করে মিজরাহি বলেন, এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইসরায়েলের দুর্বলতা চিহ্নিত করে হিজবুল্লাহও তার অস্ত্রভান্ডারে জুতসই ড্রোন যুক্ত করছে।

গত সপ্তাহান্তে উত্তর ইসরায়েলে ব্যাপক ড্রোন ও রকেট হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। এ ঘটনা উল্লেখ করে তালেবলু বলেন, বিষয়টি ইঙ্গিত দেয় যে হিজবুল্লাহ তার অস্ত্রশস্ত্রের অর্ধেক হারানো সত্ত্বেও অবিচল অবস্থানে রয়েছে। তারা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ফাঁকফোকর দিয়ে হামলা অব্যাহত রাখতে চায় বলে মনে হয়।

আরও পড়ুন