গাজায় হামাসপ্রধান হানিয়ার বোনসহ ১০ স্বজন নিহত
ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বোনসহ ১০ স্বজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে উত্তর গাজার আল-শাতি শরণার্থীশিবিরে হানিয়ার পরিবারের বাড়িতে এ হামলা চালানো হয়। গাজার জরুরি পরিষেবা সংস্থা এ কথাগুলো জানিয়েছে।
গাজার জরুরি পরিষেবা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘বিমান হামলায় ১০ জন শহীদ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বোন জাহরা হানিয়াও রয়েছেন।’
বাসাল বলেন, ‘কয়েকজনের মরদেহ এখনো বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে। মরদেহগুলো বের করে আনার মতো সরঞ্জাম আমাদের কাছে নেই।’ উদ্ধারকর্মীরা অন্য মরদেহগুলো গাজা নগরীর আল-আহলি হাসপাতালে নিয়ে যান বলেও জানান তিনি।
হামলার বিষয়ে জানতে এএফপির পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এ ঘটনার বিষয়ে তারা অবহিত জানালেও হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
এর আগে ঈদুল ফিতরের দিন গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় হানিয়ার তিন ছেলে ও চার নাতি-নাতনি নিহত হন। তারা গাড়িতে করে আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। ওই সময় হানিয়া বলেছিলেন, গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে ৬০ আত্মীয়-স্বজন হারিয়েছেন তিনি।
এদিকে রাফাসহ গাজার অন্য এলাকায়ও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৩৯ জন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৭ হাজার ৬৫৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৬ হাজারের বেশি।
হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনা এড়ানোর আহ্বান
লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে উত্তেজনা এড়াতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
গাজা থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে এ বৈঠকে আলোচনা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ব্লিঙ্কেন ও গ্যালান্টের মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। গাজায় থাকা সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করাসহ ফিলিস্তিনি জনগণের ভোগান্তি লাঘবে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ কূটনীতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন ব্লিঙ্কেন।
ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে সম্প্রতি সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা বেড়ে চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে, সে জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করার সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধান উইলিয়াম বার্নস। ওয়াশিংটন সফরকালে তাঁর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন গ্যালান্ট।