ইসরায়েলের পার্লামেন্টে ঢুকে বিক্ষোভ করলেন জিম্মিদের স্বজনেরা
ইসরায়েলের পার্লামেন্টে ঢুকে ক্ষোভ জানালেন গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ইসরায়েলিদের স্বজনেরা। আজ সোমবার একটি সংসদীয় কমিটির সভা চলাকালে প্রায় ২০ জন সেখানে ঢোকেন। প্রিয়জনদের ফিরিয়ে আনতে আরও চেষ্টা করার দাবিতে এ সময় স্লোগান দেন তাঁরা।
ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটের অর্থ কমিটির আলোচনা চলাকালে সেখানে ঢুকে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক নারী। তাঁর তিন স্বজন এখনো হামাসের হাতে জিম্মি জানিয়ে কমিটির সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি চাই, এই তিনজনের মধ্যে অন্তত একজনকে জীবিত ফিরিয়ে আনুন।’
জিম্মি ব্যক্তিদের স্বজনদের কয়েকজনের হাতে বিভিন্ন দাবিসংবলিত কাগজও ছিল। এর মধ্যে একটিতে লেখা ছিল, ‘তারা (জিম্মিরা) যখন সেখানে (গাজায়) মারা যাচ্ছে, তখন তোমরা এখানে বসে থাকতে পারো না।’ অন্যটিতে লেখা, ‘এখনই তাঁদের মুক্ত করো, এখন, এখনই।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় হামাস সেখান থেকে আড়াই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। তিন দফায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় শতাধিক জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তবে এখনো হামাসের কাছে আনুমানিক ১৩০ জন ইসরায়েলি জিম্মি আছেন।
হামাসের হামলার পর সাড়ে তিন মাস ধরে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তবে এখনো শতাধিক জিম্মি মুক্তি পাননি। এ নিয়ে ইসরায়েল সরকারের প্রতি জিম্মি ব্যক্তিদের স্বজনদের মধ্যে যে ক্ষোভ-অসন্তোষ বাড়ছে, পার্লামেন্টে ঢুকে বিক্ষোভের এই ঘটনা তারই প্রমাণ।
এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবন ও পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে বিক্ষোভ করেন জিম্মি ব্যক্তিদের স্বজনেরা। এসব বিক্ষোভ থেকে দ্রুত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে ইসরায়েল সরকারকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন এলি স্টিভি। গাজায় হামাসের কাছে এখনো জিম্মি আছেন তাঁর ছেলে ইদান। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এলি স্টিভি বললেন, ‘জিম্মিরা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা তাঁকেও (নেতানিয়াহু) ছাড়ব না।’
এদিকে হামাসের জিম্মি করা ইসরায়েলিদের মধ্যে অন্তত ২৭ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হন। এখনো যাঁরা জীবিত আছেন, তাঁদেরও এভাবে মৃত্যু হয় কি না, তা নিয়ে স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ইসরায়েল বলছে, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত হামলা চলবে। এদিকে জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে সব ফিলিস্তিনির মুক্তি চায় হামাস। দুই পক্ষের অনড় অবস্থানে মধ্যস্থতা নিয়ে আশার কিছু শোনা যাচ্ছে না।