সিরিয়ায় আলেপ্পোর পর এবার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর হামা দখলের দ্বারপ্রান্তে বিদ্রোহীরা
সিরিয়ার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর হামা গতকাল বুধবার বিদ্রোহীরা তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছেন বলে জানিয়েছে সিরীয় যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’। পর্যবেক্ষক সংগঠনটি বলেছে, হামার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে সরকারি সেনাদের পাল্টা আক্রমণের মুখেই এভাবে শহরটি দখল করার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন বিদ্রোহীরা।
হামা সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। রাজধানী দামেস্ককে সুরক্ষিত এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ধরে রাখতে শহরটি দখলে রাখা জরুরি।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের অনুগত সেনাদের হাত থেকে সিরিয়ার দ্বিতীয় বড় শহর আলেপ্পো দখলে নেওয়ার কয়েক দিন পর ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা হামা নিয়ন্ত্রণের পথে এগোলেন।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, হামা শহর তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছেন বিদ্রোহী যোদ্ধারা। শহরটি থেকে মাত্র তিন থেকে চার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন তাঁরা।
যুক্তরাজ্য–ভিত্তিক সংগঠনটি বলেছে, হামা থেকে সরকারি সেনাদের এখন দক্ষিণে হোমসে যাওয়ার জন্য একটি পথই খোলা রয়েছে।
সিরিয়ায় এক দশকের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলার পর গত প্রায় চার বছর দেশটির পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল। যদিও গৃহযুদ্ধ শুরুর পর দীর্ঘ এতটা বছরেও প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকার দেশটির সম্পূর্ণ অংশের ওপর কখনো পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে বিদ্রোহী যোদ্ধারা আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে আলেপ্পো দখল করে নেন।
এক দশকের বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলার পর গত প্রায় চার বছর দেশটির পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল। যদিও গৃহযুদ্ধ শুরুর পর দীর্ঘ এতটা বছরেও প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকার দেশটির সম্পূর্ণ অংশের ওপর কখনোই পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
এরই মধ্যে গত সপ্তাহে বিদ্রোহী যোদ্ধারা আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে আলেপ্পো দখল করে নেন। সেখান থেকে আসাদের অনুগত সেনাদের বিতাড়িত করে অন্য শহরগুলোও দখলে নজর দিচ্ছেন বিদ্রোহীরা।
আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) প্রধান আবু মোহাম্মদ আল–জোলানি গতকাল শহরটির ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন।
ওয়াসিম (৩৬) নামে হামার একজন বাসিন্দা বলেন, শহরে মুহুর্মুহু বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। দুই পক্ষের গোলাগুলির শব্দ আতঙ্ক তৈরি করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাড়িতেই থাকছি। কেননা, এখান থেকে পালানোর জায়গা নেই। ’
প্রসঙ্গত, হামায় বিদ্রোহীদের হামলা প্রেসিডেন্ট আসাদের ওপর চাপ আরও বাড়াতে পারে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে হামা সরকারি বাহিনীর দখলে আছে।
ইতিমধ্যে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগছি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দামেস্ক চাইলে তেহরান সিরিয়ায় সেনা পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করবে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সিরিয়ায় ‘আগ্রাসন’ বন্ধে তাগাদা দিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে দেশটির সংবাদ সংস্থা আরআইএ।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী শিয়া আল-সুদানি বলেন, বাগদাদ সিরিয়ায় শুধু ‘একজন নীরব দর্শক’ হয়ে থাকবে না। তিনি বিদ্রোহীদের পুনর্জাগরণের জন্য সিরিয়া সরকারের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলাকে দায়ী করেন।
এ দিকে সিরিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকা সংঘাত নিয়ে গত রোববার ফোনালাপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। একই দিন একটি যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে সিরিয়ায় যুদ্ধ উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানানো হয়েছে।