ইসরায়েল ও হামাসের অনড় অবস্থানের কারণে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে হামাস। অন্যদিকে যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এদিকে যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গতকাল রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৪ হাজার ৬৮৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৮ হাজার ফিলিস্তিনি।
মিসরের রাজধানী কায়রোয় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য ইসরায়েল ও হামাস পরস্পরকে দায়ী করছে। মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে গতকাল দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় যেকোনো যুদ্ধবিরতি সমঝোতায় অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি থাকতে বলে বলে জানিয়ে দিয়েছে হামাসের প্রতিনিধিদল। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন।
পরোক্ষ কূটনীতির অংশ হিসেবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা কায়রো সফরে যাননি। তবে গতকাল নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘হামাস নিজেদের অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে। এর মধ্যে প্রথম হলো গাজা থেকে আমাদের বাহিনীগুলো প্রত্যাহার, যুদ্ধ শেষ করা এবং হামাসকে ক্ষমতায় রাখা। ইসরায়েল এটা মেনে নিতে পারে না।’
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের কিছুক্ষণ পর বিবৃতি দেন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। এতে তিনি বলেন, হামাস সমন্বিত যুদ্ধবিরতি সমঝোতায় পৌঁছাতে আগ্রহী, যার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনের অবসান হবে, গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা থাকবে এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
আগ্রাসন অব্যাহত রাখা ও সংঘাতের চক্র বাড়ানো এবং যুদ্ধবিরতি সমঝোতায় মধ্যস্থতাকারী ও বিভিন্ন পক্ষের প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য নেতানিয়াহুকে দায়ী করেন হামাস প্রধান।
এদিকে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার জন্য একটি চুক্তির দাবিতে গত শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত ইসরায়েলে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তেল আবিবে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবিরোধী স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে সংঘাত দীর্ঘায়িত করার জন্য অভিযুক্ত করেন।
ইসরায়েলে বন্ধ হচ্ছে আল-জাজিরা
এদিকে ইসরায়েলে আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার। গতকাল এক বিবৃতিতে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
১ এপ্রিল আল-জাজিরা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা দিয়ে একটি আইন ইসরায়েলের পার্লামেন্টে পাস হয়। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের মধ্য দিয়ে এখন সেটি আইনে পরিণত হয়েছে।