আবার যেন জন্ম নিলাম, আবার জয় পেলাম: উত্তর গাজার জনস্রোতে শামিল ফিলিস্তিনি নারী
ফিলিস্তিনের গাজার উত্তরাঞ্চলের দিকে ছুটছেন লাখ লাখ মানুষ। দীর্ঘ সময় রক্তপাতের পর নিজেদের ঘরবাড়িতে ফিরছেন তাঁরা। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও দুই দিন ধরে উত্তরে যাওয়ার পথ আটকে রেখেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। পরে ইসরায়েলি নারী আরবেল ইয়েহুদসহ আরও দুই জিম্মিকে মুক্তি দিতে হামাস রাজি হলে পথটি আবার খুলে দেওয়া হয়।
গাজার মধ্যাঞ্চলের ওপর দিয়ে যাওয়া ওই পথটি আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় প্রথম খুলে দেওয়া হয়। সকাল ৯টায় তা দ্বিতীয় ধাপে খুলে দেওয়ার কথা ছিল। এর আগেই পথটি দিয়ে ২ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি উত্তরে প্রবেশ করেছেন বলে গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় উত্তর গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তারপরও নিজেদের বাড়িতে ফিরতে আপত্তি নেই সেখানকার বাসিন্দাদের। এক ফিলিস্তিনি নারী বিবিসিকে বলেন, ‘বাড়ি ফিরতে পেরে আমরা খুব খুশি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। মনে হচ্ছে, আবার যেন নতুন করে জন্ম নিলাম। আমরা আবার জয় পেয়েছি।’
এর আগে সপ্তাহান্তে ইসরায়েল দাবি করে—চুক্তি অনুযায়ী হামাস বেসামরিক জিম্মি আরবেল ইয়েহুদকে মুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এরপর উত্তর গাজায় যাওয়ার পথটি বন্ধ করে দেয় তারা। পরে গতকাল রাতে কাতারের মধ্যস্থকারীরা জানান, শুক্রবারের আগে ইয়েহুদসহ দুই জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে হামাস। তাই সোমবার থেকে ইসরায়েলও বন্ধ রাখা পথটি খুলে দেবে।
তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে—তা নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও। তাঁর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চুক্তির কোনো ধরনের লঙ্ঘন সহ্য করা হবে বলে আবার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জীবিত ও মৃত—আমাদের সব জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কাজ করে যাব।’
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতা অনুযায়ী, মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় অবস্থান করা প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিকে উত্তরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। ১৫ মাসের বেশি সময় রক্তক্ষয়ের পর ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। দীর্ঘ এই সময়টিতে উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের হামলায় ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অপর দিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় নিহত হন প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ। একই সঙ্গে দেশটি থেকে প্রায় আড়াই শ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যান হামাস সদস্যরা।