ইরানের হাতে মোহাজের-১০, হামলা চালাতে পারবে ইসরায়েলে
নতুন একটি ড্রোন প্রকাশ্যে এনেছে ইরান। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ড্রোনটি ইরান থেকে উড়ে গিয়ে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম।
গতকাল মঙ্গলবার ছিল ইরানের প্রতিরক্ষাশিল্প দিবস। দিবসটি উপলক্ষে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনীর লজিস্টিকস বিভাগের পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানে নতুন ড্রোনটি প্রকাশ্যে আনা হয়। এর নাম মোহাজের-১০।
অনুষ্ঠানে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির সামরিক বাহিনীর ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
ইরানের এই ড্রোন যুক্তরাষ্ট্রের এমকিউ-৯ রিপারের আদলে বানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও দেখানো হয়, তাতে ড্রোনটি অজ্ঞাত একটি বিমানঘাঁটির ওপর দিয়ে উড়ে ভিডিও ধারণ করেছে। বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের বোমা ও রাডার-প্রতিরোধী সরঞ্জাম বহন করতে পারে মোহাজের-১০। সেই সঙ্গে এটি নজরদারিতে সক্ষম।
ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত শতকের আশির দশকে যখন ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলছিল, তখন এই ড্রোনের প্রথম সংস্করণটি তৈরি করেছিল তেহরান। সর্বশেষ সংস্করণ মোহাজের-১০ প্রায় ৩০০ কেজি ওয়ারহেড বা যুদ্ধসরঞ্জাম বহন করতে পারে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ কিলোমিটার বা ১৩০ মাইল গতিতে উড়তে পারে। এমনকি বহন করতে পারে ৪৫০ লিটার বা ১২০ গ্যালন জ্বালানি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোহাজের-১০ প্রায় ৭ হাজার মিটার ওপর দিয়ে বিরতিহীনভাবে ২ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করতে পারে। এর অর্থ হলো, ড্রোনটি ইরান থেকে উড়ে গিয়ে ইসরায়েলের যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম।
মোহাজের-১০ নিয়ে ইরানের সংবাদমাধ্যমে একটি পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ড্রোনটিকে ইসরায়েলের দিমোনা পারমাণবিক স্থাপনার ওপর মেঘের ভেতর দিয়ে উড়তে দেখা যায়। পোস্টারে ফারসি ও হিব্রু ভাষায় লেখা ছিল, ‘প্রস্তরযুগে ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত হও’।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমে বলেন, ‘সামরিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে ইরান। এর মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে ইরান নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এসেছে।’
ক্রমবিকাশমান ড্রোনশিল্প নিয়ে ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরোধ রয়েছে। পশ্চিমাদের অভিযোগ, ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য ইরান মোহাজের ড্রোনের আগের সংস্করণ রাশিয়ার কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর আগেই তারা মস্কোর কাছে ওই ড্রোন হস্তান্তর করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন, হেবরনে সাম্প্রতিক হামলাসহ ইসরায়েলিদের ওপর বিভিন্ন সময় চালানো হামলায় ইরানের পক্ষ থেকে অর্থায়ন করা হয়েছে এবং উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। নেতানিয়াহুর এমন অভিযোগের এক দিন পরই ইরান মোহাজের-১০ ড্রোন সামনে আনল।