গাজায় ইসরায়েলি ‘অপরাধের’ আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান কাতারের
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি ‘অপরাধের’ বিষয়ে অবিলম্বে, বিস্তৃত পরিসরে ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে কাতার।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি গতকাল রোববার এই আহ্বানের কথা জানান।
শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান গতকাল আল-জাজিরাকে বলেন, গাজায় আরেকটি যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাতার তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। পাশাপাশি অবরুদ্ধ গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য কাতারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম খান ইসরায়েল ও হামাসকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর কার্যালয় সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তকে ত্বরান্বিত করবে।
করিম খান ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে তাঁর চার দিনের সফর শেষ করেছেন। তিনি গতকাল বলেন, সব পক্ষকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলতে হবে। যদি তা না করা হয়, তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁর কার্যালয় পদক্ষেপ নেবে। তখন কেউ যাতে অভিযোগ না করে।
মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। গত ২৪ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলা এই যুদ্ধবিরতিকালে ৮০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেয় ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি শেষ হতেই গাজা উপত্যকায় আবার প্রচণ্ড হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল রোববার গাজার কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তাঁদের বড় অংশই নারী ও শিশু।
গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে গত শনিবার নিরাশা দেখা দেয়। কারণ, কাতার থেকে ইসরায়েল তার গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের আলোচকদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
অন্যদিকে, হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কারাবন্দী ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি জিম্মি বিনিময় নিয়ে তারা আর আলোচনা করবে না।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, হামাসের এই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে হামাস। হামাসের হাতে এখনো ১৩৭ জিম্মি আছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় সাড়ে ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি নারী ও শিশু।