হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে ইসরায়েলকে সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র
লেবাননের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সর্বাত্মক যুদ্ধ বেধে গেলে দেশটিকে সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে সফরকারী ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে এমনই আশ্বাস দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইসরায়েল এমন সময় এ আশ্বাস পেল, যখন লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘাত বেড়েছে। এদিকে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিতের জন্য সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রকাশ্যে দোষারোপ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ নিয়েও দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে মন কষাকষি চলছিল।
ওয়াশিংটনে সফর করা ইসরায়েলি প্রতিনিধি দলে ছিলেন—দেশটির কৌশলগত বিষয়াদি সংক্রান্ত মন্ত্রী রন ড্রেমার ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাকি হানেগবি। তাঁরা বেশ কয়েক ধাপে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সমন্বয়কারী ব্রেট ম্যাকগার্কের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ইসরায়েলের উত্তরে সীমান্ত পরিস্থিতি, ইরান, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাতের বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন—ইসরায়েলের প্রয়োজন হলে দেশটিকে নিরাপত্তা সহায়তা দেওয়া হবে। তবে এ সংঘাত ঘিরে নিজেদের কোনো সেনা মোতায়েন করবে না ওয়াশিংটন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। দুই পক্ষের এ সংঘাতের মধ্যে ইসরায়েলে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছিল হিজবুল্লাহ। সম্প্রতি এ হামলা বেড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বেশ কয়েক দফায় বলেছে, ইসরায়েলের উত্তরে নতুন কোনো যুদ্ধ চায় না তারা।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের চুক্তি যখন আলোর মুখ দেখছে না, তখনই হামলার পরিমাণ বাড়িয়েছে হিজবুল্লাহ। এমন পরিস্থিতিতে উত্তর ইসরায়েলে দুই পক্ষের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তাঁদের শঙ্কা—হিজবুল্লাহ যদি তাদের হামলার পরিমাণ আরও বাড়ায়, তাতে ইসরায়েলিদের মৃত্যু সংখ্যা বাড়বে। এতে করে সর্বশক্তি নিয়ে লেবাননে হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল।
সম্প্রতি সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যদি সর্বাত্মক যুদ্ধ বেধে যায়, তাহলে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে আয়রন ডোমসহ ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো। কারণ, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যত ক্ষেপণাস্ত্র আছে, হিজবুল্লাহর হাতে তার চেয়ে বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।