ইসরায়েলে আরও হামলা চালানো হতে পারে: হিজবুল্লাহপ্রধান

লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। গতকাল রোববার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণেছবি: এএফপি

লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, ইসরায়েলের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রকেট ও ড্রোন হামলার প্রভাব মূল্যায়ন করবে তাঁর সংগঠন। এই মূল্যায়নের পর হিজবুল্লাহ ঠিক করবে, সংগঠনের কমান্ডার ফুয়াদ শোকর হত্যার বদলা নিতে তারা ইসরায়েলে আরও হামলা চালাবে কি না।

হিজবুল্লাহর নেতা নাসরাল্লাহ গতকাল রোববার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।

নাসরাল্লাহ দাবি করেন, হিজবুল্লাহর পরিকল্পনা অনুসারেই ইসরায়েলে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে গতকাল বড় ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় লেবাননে তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে সংগঠনের কমান্ডার ফুয়াদ শোকর হত্যার বদলা নিতে তারা ইসরায়েলে বিপুলসংখ্যক রকেট ও ড্রোন ছুড়েছে। এর মধ্য দিয়ে হামলার ‘প্রথম পর্যায়’ সম্পন্ন হয়েছে।

অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনী বলেছে, হিজবুল্লাহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল—এমন তথ্য পেয়ে তারা আগেভাগেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালায়। হামলায় অন্তত ১০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়।

ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করে, হিজবুল্লাহ বড় ধরনের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু ইসরায়েল আগাম হামলা চালানোয় হিজবুল্লাহ তা করতে পারেনি। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর এমন দাবি নাকচ করেছে হিজবুল্লাহ।

আরও পড়ুন

ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে গতকাল। এর প্রায় ১২ ঘণ্টা পর হিজবুল্লাহপ্রধান নাসরাল্লাহ টেলিভিশনে ভাষণ দেন।

নাসরাল্লাহ বলেন, তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবেই বেসামরিক নাগরিক বা অবকাঠামোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা থেকে বিরত ছিল। এর মধ্যে তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরও ছিল।

হিজবুল্লাহপ্রধান বলেন, হামলার ক্ষেত্রে তাঁর সংগঠনের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসরায়েলি ভূখণ্ডের প্রায় ১১০ কিলোমিটার ভেতরে একটি সামরিক গোয়েন্দা ঘাঁটি। এটি তেল আবিব থেকে মাত্র ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

নাসরাল্লাহ বলেন, তাঁর সংগঠন এই প্রতিশোধমূলক হামলার ফলাফল মূল্যায়ন করবে। যদি ফলাফল যথেষ্ট না হয়, তাহলে তাঁরা অন্য সময় আবার জবাব দেবেন।

হিজবুল্লাহপ্রধান বলেন, হামলাকারী ড্রোন পাঠানোর আগে তাঁর সংগঠনের যোদ্ধারা ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করার কৌশল নেন। এ উদ্দেশ্যে তাঁরা ৩০০টির বেশি কাতিউশা রকেট সফলভাবে ছোড়েন।

আরও পড়ুন

নাসরাল্লাহ দাবি করেন, লেবাননে চালানো ইসরায়েলের আগাম হামলায় হিজবুল্লাহর ড্রোন বা রকেট লঞ্চারের কোনো ক্ষতি হয়নি।

হিজবুল্লাহপ্রধান বলেন, তাঁর সংগঠন ইসরায়েলে বড় পরিসরের হামলার পরিকল্পনা করেনি। বিশেষ করে যেমনটা বলছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ভাষ্য, হিজবুল্লাহ হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে চেয়েছিল।

তবে নাসরাল্লাহ স্বীকার করেন, এই অঞ্চলে ইসরায়েলি ও আমেরিকান সামরিক তৎপরতাসহ কিছু কারণে তারা প্রতিশোধমূলক হামলাটি চালাতে সময় নিয়েছেন।

আরও পড়ুন