ইরানকে যেভাবে হুঁশিয়ারি দিলেন বাইডেন
ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল সোমবার তিনি বলেছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের প্রতি সহিংস আচরণের কারণে ইরানকে মূল্য চোকানোর ব্যবস্থা করবে যুক্তরাষ্ট্র। খবর এএফপির।
এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, এ সপ্তাহে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতার জন্য ষড়যন্ত্রকারীদের মূল্য দিতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন আরও বলেছেন, ‘আমরা ইরানের কর্মকর্তাদের জবাবদিহি চালিয়ে যেতে বাধ্য করব। আমরা ইরানিদের স্বাধীনভাবে বিক্ষোভ করার অধিকারকে সমর্থন করি।’
বাইডেন আরও বলেছেন, ইরানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সহিংস আচরণের জন্য তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সেখানে সম–অধিকার ও মানবিক মর্যাদা রক্ষার দাবিতে নারী ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। ইরানের যেসব নারী ও নাগরিক সাহসের সঙ্গে বিক্ষোভ করছেন, তাঁদের সবার পাশে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে, বলেছেন বাইডেন।
ইরানের কঠোর পর্দাবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২২ বছরের মাসা আমিনিকে আটক করে নীতি পুলিশ। তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যান মাসা। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। ইরানে এ নিয়ে তৃতীয় সপ্তাহের মতো বিক্ষোভ চলছে।
তবে ইরানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন, সে ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দেননি বাইডেন। বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে ইরান। তেহরান বলেছে, এই পরমাণু কর্মসূচি বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সন্দেহ, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি গতকাল সোমবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে। হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব কারিন জেন পিয়েরে বলেছেন, নারীদের প্রতি ইরানি সরকারের আচরণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যে বিক্ষোভ করছে, তা সঠিক। তবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সহিংস আচরণ করছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।
জেন পিয়েরে আরও বলেছেন, এ সপ্তাহে ইরানে চলমান ঘটনার কারণে দেশটির প্রতিভাবান তরুণ সম্প্রদায় উন্নতমানের জীবনযাপনের জন্য বিদেশে পাড়ি দেবেন। ইরানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নিরাপত্তাকর্মীদের আচরণে আমরা উদ্বিগ্ন।
এসব উত্তেজনার পরও মার্কিন প্রশাসন ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, বলেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ইরানের জন্য উদ্বেগ রয়েছে। ইরানের পরমাণু সংকটের সবচেয়ে ভালো সমাধান হতে পারে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তি কার্যকর করা। ২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান জেসিপিওএ চুক্তিতে পৌঁছায়।
চুক্তি মোতাবেক ইরান পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। শর্ত মেনে চলার বদলে সে সময় ইরানের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।’ জেন পিয়েরে আরও বলেছেন, ‘ইরানের এ ধরনের আচরণের পেছনের কারণ আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’