বৈরুতে হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদর দপ্তরে হামলার দাবি ইসরায়েলের

বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলার পর ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছেছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর একটি গোয়েন্দা সদর দপ্তরে হামলা করার দাবি করেছে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হয়।

হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে কয়েক দিন ধরে ব্যাপক বোমা হামলা চালানোর পর সম্প্রতি ইসরায়েল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশে ‘স্থল অভিযান’ শুরু করেছে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলকে হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে গত কয়েক দিনে ইসরায়েলি বোমা হামলায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

গতকাল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, লেবাননের বৈরুতে হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদর দপ্তরের বিভিন্ন স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে তারা।

তিন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের খবরে বলা হয়েছে, হামলার লক্ষ্য ছিলেন হিজবুল্লাহ নেতা হাশেম সাফিয়েদ্দিন। এক সপ্তাহ আগে নিহত হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে সাফিয়েদ্দিনকে বিবেচনা করা হয়।

এ ব্যাপারে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে জানতে চেয়েছিল এএফপি। তবে তারা খবরটি নিশ্চিত করেনি।

হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, গতকাল রাতে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের ঘাঁটিতে টানা ১১ বার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর আগে সূত্র বলেছিল, বৈরুত বিমানবন্দরের পাশের একটি ওয়্যারহাউস লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

লেবাননের জনগণকে অবিলম্বে ২০টির বেশি গ্রাম এবং নাবাতিয়েহ শহর ফাঁকা করে দিতে বলেছে ইসরায়েল।

সম্প্রতি দক্ষিণ বৈরুতে ইসরায়েলের বড় ধরনের বোমা হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ও অন্য কমান্ডাররা নিহত হন। এরপর লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

এদিকে ইরানের ছোড়া ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্রের বেশির ভাগই প্রতিহত করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট সতর্ক করে বলেছে, ‘যারা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ওপর হামলা করবে, তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।’

ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস বলেছে, তাদের কুদস ফোর্স শাখার এক জেনারেলকে হত্যা, জুলাইয়ে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা এবং সম্প্রতি হিজবুল্লাহ নেতা নাসরুল্লাহকে হত্যার বদলা হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয়েছিল।

এদিকে আজ শুক্রবার ভোরে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫১ জন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, লেবাননে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে তাদের ৯ জন সেনা নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধের প্রভাব সিরিয়াতেও পড়েছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, দামেস্কে ইসরায়েলি হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে হাসান জাফর আল কাসিরও আছেন। তিনি নিহত হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর জামাতা।

ইরানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় আহত হওয়া রেভল্যুশনারি গার্ডসের সামরিক উপদেষ্টা মাজিদ দিবানি গতকাল মারা গেছেন। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দামেস্কে ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছিলেন তিনি।