নিজেদের ‘সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে’ ইসরায়েলি হামলার জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। আজ সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাগেই এ হুঁশিয়ারি দেন। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে।
গত শনিবার দিবসের প্রথম প্রহর থেকে কয়েক দফায় ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। শুরুতে অবশ্য এ হামলাকে ততটা গুরুত্ব দেয়নি তেহরান। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এ হামলার ‘সব লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।’
তেহরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, হামলায় রাডার–ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ ছাড়া আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কর্মরত চার সেনা নিহত হয়েছেন। অবশ্য গতকাল ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো হামলায় একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার তথ্যও দিয়েছে।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সাপ্তাহিক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইসমাইল বাগেই বলেন, ইহুদিবাদী সরকারকে (ইসরায়েল) সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর জবাব দিতে ইরান সামর্থ্যের মধ্যে সব উপায় কাজে লাগাবে। তিনি বলেন, ইরানের হামলার ধরন হবে ইসরায়েলের হামলার ধরনের ওপর ভিত্তি করেই। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
* উত্তর গাজা অবরুদ্ধ করে ইসরায়েলের তিন সপ্তাহের অভিযানে এক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত।
* ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে গত রোববার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরায়েলে কী ধরনের হামলা চালানো হবে, তা ইরানি কর্মকর্তারা ঠিক করবেন। ইসরায়েলের হামলাকে খাটো করে বা অতিরঞ্জিত করে দেখা উচিত হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে গতকাল স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর প্রধান হুসেইন সালামি বলেন, ইরানের হামলা করায় ইসরায়েলকে ‘তিক্ত পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
গাজায় মৃত্যু ৪৩ হাজার ছাড়াল
ফিলিস্তিনের উত্তর গাজা অবরুদ্ধ করে তিন সপ্তাহ ধরে চালানো ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানে এক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
এ নিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় গাজায় ৪৩ হাজার ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ১১০ জন। সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ৯৬ জন। আহত হয়েছেন ২২৭ জন।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে দুই দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এ সময় গাজায় বন্দী থাকা চার ইসরায়েলির মুক্তির বিনিময়ে নির্দিষ্টসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। তবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে। রকেট ছুড়ে ইসরায়েলের বিমান হামলার জবাব দিচ্ছে হিজবুল্লাহ। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়া ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর টায়রের বড় অংশ থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল।