বিক্ষোভে উত্তাল ইসরায়েলে ধর্মঘটের ডাক ট্রেড ইউনিয়নের
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর ইসরায়েলজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে দেশটির প্রধান ট্রেড ইউনিয়ন হিস্ট্রাড্রট দেশজুড়ে ধর্মঘটের নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল রোববার এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে রোববার হাজারো ইসরায়েলি রাস্তায় নেমে আসেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। জিম্মিদের মুক্তির জন্য অবিলম্বে চুক্তির দাবি জানান।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সে সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর মধ্যে ছয়জনের মরদেহ গত শনিবার দক্ষিণ গাজার রাফা এলাকায় একটি সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করে ইসরায়েলি সেনারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজায় হামাসের হাতে এখনো ৯৭ জন জিম্মি আছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের।
গত বছরের নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির মধ্যে বেশ কয়েকজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে জিম্মিদের স্বজনদের বিশ্বাস, এখনো যাঁরা জিম্মি আছেন, তাঁদের মুক্ত করতে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
জিম্মি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের ফোরাম বলছে, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে আলোচনার মাধ্যমে জরুরি একটি চুক্তি করা দরকার ছিল। এক বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েক মাসের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় বিলম্ব আর অজুহাত না দেখালে ওই ছয় জিম্মি হয়তো এখনো বেঁচে থাকতেন।
একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে জিম্মিদের পরিবার ইসরায়েলজুড়ে সাধারণ বিক্ষোভের ডাক দেয়। এর পরপরই ইসরায়েলের শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন হিস্ট্রাড্রট আজ সোমবার থেকে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালনের নির্দেশ দেয়।
হিস্ট্রাড্রটের চেয়ার আর্নন ভার-ডেভিড এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শুধু আমাদের হস্তক্ষেপই তাদের (সরকার) নাড়া দিতে পারে। জিম্মি মুক্তিতে রাজনৈতিক কারণে একটি চুক্তির অগ্রগতি হচ্ছে না। এটা অগ্রহণযোগ্য।’
গতকাল তেল আবিবে বিক্ষোভকারীরা একটি মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে পড়েন। পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয়েছে তারা।
মরদেহ উদ্ধার হওয়া জিম্মিদের নাম প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। তাঁরা হলেন কারমেল গ্যাট, অ্যাডেন ইয়েরুশালমি, হার্শ গোল্ডবার্গ-পলিন, আলেকসান্দার লোভানভ, আলমগ সারুসি এবং ওরি ড্যানিনো।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগার বলেছেন, ‘প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী, আমরা সেখানে পৌঁছানোর অল্প সময় আগে হামাসের সদস্যরা তাঁদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে।’
কাতারে অবস্থানরত হামাসের কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক বলেন, জায়নবাদীদের বোমার আঘাতে ওই জিম্মিরা নিহত হয়েছেন। তবে এ দাবি নাকচ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শিরা সলোমন জানান, খুব কাছ থেকে গুলি করে ছয় জিম্মিকে হত্যা করা হয়েছে।