আটক ইসরায়েলিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি চায় হামাস
ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে আজ শনিবার আচমকা রকেট হামলা চালায় হামাস। এ সময় তারা বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি সেনাকে আটক করে। হামাসের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, তাঁদের জিম্মায় থাকা এসব ইসরায়েলিকে দিয়ে ইসরায়েলে কারাবন্দী ফিলিস্তিনিদের ছাড়িয়ে আনা হবে।
হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর উপপ্রধান সালেহ আল-আরোওরি আজ শনিবার বলেন, ‘আমাদের হাতে অনেক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আটকও হয়েছেন অনেকে। লড়াই এখনো চলছে।’
হামাস আজ যেসব ইসরায়েলি সেনাকে আটক করেছে, তাঁদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সালেহ আল-আরোওরি। তবে তাঁদের সংখ্যাটা কত, এ নিয়ে কিছু জানাননি তিনি।
ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েল আবারও বড় সংঘাতে জড়িয়েছে। শনিবার সকালে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকা থেকে মুহুর্মুহু রকেট হামলা চালানো হয়েছে। নির্বিচার পাল্টা বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলও। পাল্টাপাল্টি হামলায় অন্তত ১০০ ইসরায়েলি এবং গাজায় ১৯৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। দুই পক্ষেই দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে তেল আবিব শহরের উত্তরে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ৫ হাজার রকেট ছোড়ে হামাস। এ ছাড়া গাজা উপত্যকা থেকে বহু সশস্ত্র হামাস যোদ্ধা ইসরায়েলের দক্ষিণ অঞ্চলে প্রবেশ করেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশটির ২২ অঞ্চলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের লড়াই চলছে।
হামাসের রাজনৈতিক নীতিনির্ধারণে যুক্ত সালেহ আল-আরোওরি বলেন, ‘আমাদের অনেকে (ইসরায়েলের) কারাগারে। তাঁরা শিগগিরই মুক্ত হবেন। আমরা যাঁদের আটক করেছি, তাঁদের বিনিময়ে আমাদের সব বন্দীকে ছাড়িয়ে আনব। লড়াই যত দীর্ঘ হবে, যুদ্ধবন্দী তত বাড়তে থাকবে।’
হামাসের এ লড়াই স্বাধীনতার জন্য জানিয়ে সালেহ আল-আরোওরি বলেন, ‘এটি কোনো অভিযান নয়। আমরা পরিকল্পনা করেই এ লড়াই শুরু করেছি। আশা করছি এই লড়াই চলবে এবং যুদ্ধের পরিধি বাড়বে। আমাদের একটাই মূল লক্ষ্য, সেটা হলো আমাদের এবং আমাদের পবিত্র স্থানের স্বাধীনতা অর্জন।’
সালেহ আল-আরোওরি বলেন, ‘স্বাধীনতা, ইসরায়েলি দখলদারমুক্ত করা ও পবিত্র স্থানগুলো রক্ষার অধিকার রয়েছে ফিলিস্তিনিদের। যতক্ষণ না আমরা বিজয়ী ও স্বাধীন হচ্ছি, ততক্ষণ এই লড়াই চালিয়ে যাব।’
কারাবন্দীদের নিয়ে কাজ করা রামাল্লাভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা আদ্দামিরের হিসাবে, বর্তমানে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী রয়েছেন প্রায় ৫ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি। তাঁদের মধ্যে ৩৩ নারী ও ১৭০ কিশোর। নির্বাহী আদেশে আটক রয়েছেন ১ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, হামাসের আজকের হামলায় তাদের সেনা ও সেনা কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন। কেউ কেউ আটকও হয়েছেন। তবে তাঁদের সংখ্যা কত জানানো হয়নি।
পর্যবেক্ষকেরা আশঙ্কা করছেন, হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনীর অভিযান অত্যাসন্ন। এদিকে হামাস বলছে, তারা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। সালেহ আল-আরোওরি বলেন, ‘এখন যেকোনো কিছু হতে পারে। ইসরায়েলের অভিযান মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছি আমরা।’