২২ বছরের সাধনায় পাওয়া শিশুসন্তান কি ক্ষুধায় মারা যাবে, প্রশ্ন ফিলিস্তিনি মায়ের
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকেরা গাজায় কান্নারত এক মায়ের কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। ভিডিওতে এই মা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, খাবারের অভাবে তাঁর শিশুসন্তানটি মারা যেতে পারে। ২২ বছরের চেষ্টার পর তাঁর এই সন্তানের জন্ম হয়েছিল।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট হওয়া ভিডিওতে গাজা উপত্যকার এই ফিলিস্তিনি মাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার ছেলেটি খাবার চায়, পানি চায়। ২২ বছরের কষ্টের পর সে আমার কাছে এসেছে।’
আকুল হয়ে এই মা বলেন, সেই ছেলে কি এভাবে শেষ হয়ে যাবে? খাবার নেই। সে ক্ষুধা-অপুষ্টিতে ভুগছে।
চলমান গাজা যুদ্ধ থেকে ফিলিস্তিনিদের বাঁচানোর জন্য আরব দেশগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান এই মা। তিনি বলেন, ‘আমি আরব দেশগুলোকে বলছি, যাঁরা আমাদের দেখছেন, আমাদের অবস্থাটা অনুভব করুন, এই যুদ্ধ থেকে আমাদের বাঁচান।’
ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে আল-জাজিরার ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা। গতকাল সোমবার আল-জাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই মাকে নিয়ে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট হওয়া একটি ভিডিও জুড়ে দেওয়া হয়।
অবরুদ্ধ গাজার প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির বেশির ভাগই মানবিক ত্রাণসহায়তানির্ভর। গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েল নির্বিচার হামলা শুরু করে। এতে গাজায় মানবিক বিপর্যয় নেমে আসে।
যুদ্ধ শুরুর আগে মিসর সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিংয়ের মাধ্যমে স্থলপথে গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা যেত। কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা ক্রসিংটির নিয়ন্ত্রণ নিলে এই পথে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ করে দিতে ইসরায়েলের প্রতি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান সত্ত্বেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি।
গত মে মাসের শুরুর দিকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ‘পুরোদমে দুর্ভিক্ষ’ শুরু হয়েছে।
গাজার গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, খাবারের অভাবে অপুষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ৩৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া যুদ্ধের ২৯০ দিনে ১৬ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে। গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৩৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।