গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবের বিষয়ে জবাব জানিয়ে দিয়েছে হামাস
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবের বিষয়ে হামাস তার জবাব জানিয়ে দিয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটি গতকাল মঙ্গলবার বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবের বিষয়ে হামাসের জবাব প্রধান মধ্যস্থতাকারীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, কিছুক্ষণ আগে কাতার ও মিসরীয় ভাইদের কাছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবের বিষয়ে হামাস তার জবাব জানিয়ে দিয়েছে।
হামাস তার বিবৃতিতে ‘একটি সমন্বিত ও পূর্ণ যুদ্ধবিরতির’ কথা উল্লেখ করেছে।
প্যারিস বৈঠকের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি আসে। প্রস্তাবটি নিয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে হামাস।
চার মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বেড়ে চলছে।
হামাস বলেছে, প্রস্তাবটির লক্ষ্য ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অবসান ঘটানো। ত্রাণ, আশ্রয় ও পুনর্গঠন নিশ্চিত করা। উপত্যকায় অবরোধ প্রত্যাহার ও বন্দিবিনিময়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনার বিষয়ে হামাসের কাছ থেকে ‘ইতিবাচক’ সাড়া পেয়েছে দোহা।
সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে পাশে রেখে এ কথা বলেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী। সংকট নিরসন চেষ্টায় ব্লিঙ্কেন এখন মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন।
ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাসের জবাব ইতিমধ্যে ইসরায়েলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দোহায় সাংবাদিকদের ব্লিঙ্কেন বলেন, তিনি তাঁর এই সফরের অংশ হিসেবে ইসরায়েলেও যাবেন। সেখানে তিনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে হামাসের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরবেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার জন্য তাঁরা যথাসম্ভব কঠোর পরিশ্রম করবেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। সরকারি তথ্যের আলোকে এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েলে হামাসের এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ১৬০ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে হামাস প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে। জিম্মিদের মধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গত নভেম্বরের শেষের দিকের এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় ছেড়ে দেয় হামাস।
ইসরায়েল বলেছে, গাজায় এখনো ১৩২ জন জিম্মি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চার মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২৭ হাজার ৫৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।