লোহিত সাগরে হুতিদের মোকাবিলায় বহুজাতিক টহল জোরদারের ঘোষণা অস্টিনের

হুতির সদস্যরা লোহিত সাগরে গ্যালাক্সি লিডার নামের একটি মালবাহী জাহাজ পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ২০ নভেম্বরফাইল ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েল ও হামাসের সংঘাতের আঁচ যে সীমানা অতিক্রম করে গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে, তা বারবার স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উত্তরে লেবাননে হেজবুল্লাহ থেকে শুরু করে ইরান-সমর্থিত অন্যান্য শক্তিও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের কার্যকলাপ এমনকি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে।

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পাশাপাশি হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের জন্যও হুমকি হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার একাধিক দেশ যৌথভাবে লোহিত সাগরের দক্ষিণ প্রান্ত ও এডেন উপসাগরে টহলদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বাহরাইন সফরকালে এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। তাঁর মতে, যৌথভাবে আন্তর্জাতিক এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সময় এসে গেছে। তিনি বলেন, ‘অপারেশন প্রস্প্যারিটি গার্ডিয়ান’ নামের বহুদেশীয় নিরাপত্তা উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বাহরাইন, যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সেশেলস ও স্পেন যোগ দিচ্ছে।

ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমান সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে প্রায় এক হাজার মাইল দূরে ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপরেও হুতি গোষ্ঠী হামলা চালাচ্ছে। গতকাল সোমবারই এক রাসায়নিক বা তেলবাহী ট্যাংকার জাহাজের ওপর ড্রোন ও জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তারা হামলা চালিয়েছে।

হুতির মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারেনা বলেন, জাহাজের আরোহীরা বার্তার জবাব না দেওয়ায় হামলা চালানো হয়েছে। হুতিরা ইসরায়েলগামী সব জাহাজের ওপর হামলার হুমকি দিয়ে আসছে। তাঁদের মতে, গাজায় প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত না করলে এমন হামলা চালিয়ে যাওয়া হবে। এমন হুমকির মুখে অনেক বড় জাহাজ কোম্পানি লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছে।

লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করতে আন্তর্জাতিক জোটের সদস্যরা ঠিক কোন ধরনের পদক্ষেপ নেবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রের মতো অন্যান্য দেশ হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা বা সরাসরি এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার মতো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত কি না, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর জোটের সদস্যদেশগুলো এখনো নিজেদের ভূমিকা স্পষ্ট করেনি।