গাজা সংকট নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অবস্থান কী
সংঘাতের মধ্যে চার দিনের মাথায় আজ সোমবার দ্বিতীয় দফায় ইসরায়েলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এটা অনুমেয় যে তিনি এই সংকট ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অবস্থানই তুলে ধরবেন। বাইডেন গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ চ্যানেল সিবিএসকে বলেছেন, ইসরায়েলের যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছু সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তিনি মনে করেন, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইসরায়েল এমন একদল মানুষের পেছনে ছুটছে, যারা বর্বরতার সঙ্গে যুক্ত। তাদের এই বর্বরতা গণহত্যার (হোলোকাস্ট) ধারাবাহিকতা। সে কারণে আমি মনে করি, ইসরায়েলের জবাব দিতে হবে। তাদের হামাসের পিছু নিতে হবে।’
হামাসকে কাপুরুষের দল আখ্যায়িত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা বেসামরিক মানুষের পেছনে গিয়ে লুকিয়েছে।
ইসরায়েলের গাজা অবরোধ করে সেখানে পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ সবকিছু বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে বাইডেন বলেন, তিনি মনে করেন, গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোর জন্য পথ করে দিতে হবে।
গাজায় স্থল অভিযান চালানোর জন্য সীমান্তে কয়েক লাখ সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি শত শত ট্যাংক ও সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুত রেখেছে ইসরায়েল। এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলকে সাবধানতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, গাজা দখল করা হবে ইসরায়েলের জন্য ‘বিরাট এক ভুল’।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ খোলা রাখা দরকার বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বাইডেন ইসরায়েল সফরের আমন্ত্রণ বিবেচনায় রেখেছেন। শিগগিরই তিনি দেশটি সফর করতে পারেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসকগোষ্ঠী হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। তাদের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০–এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২৯ জন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক রয়েছেন। হামাসের এই হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় বিমান থেকে নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের হামলায় গাজায় ২ হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষের প্রাণ গেছে।
হামাসের হামলার পর গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলে গিয়ে দেশটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যেকোনো অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে থাকবে বলে সেদিন ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। ব্লিঙ্কেন এরপর মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি আরব দেশ সফর করে এই সংকট নিয়ে নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই সফর শেষ করে দেশে না ফিরে আবারও ইসরায়েলে গেছেন ব্লিঙ্কেন।
ব্লিঙ্কেন যখন গত শুক্রবার আরব দেশগুলো সফরের উদ্দেশে ইসরায়েল ছেড়েছিলেন, তারপরই গাজার উত্তরাঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের দক্ষিণে সরে যেতে বলেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এবার তাঁর ইসরায়েল সফরে গাজার মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ খুলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের অনেকে আশা করছেন।