ঘোড়সওয়ারি বালিকায় মুগ্ধ দুবাইয়ের শাসক

ঘোড়সওয়ারি লানিয়া ফাখের
ছবি: পরিবারের সৌজন্য

আট বছর বয়সী ইরাকি বালিকা লানিয়া ফাখের। যে বয়সে পুতুল নিয়ে খেলে সময় কাটানোর কথা, সে বয়স থেকেই ঘোড়ার প্রতি অন্য রকম ভালোবাসা তার। ঘোড়ার প্রতি লানিয়ার এ ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসক পরিবারেও।

অবশ্য ঘোড়ার প্রতি লানিয়ার অকৃত্রিম এই ভালোবাসার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে হৃদয়বিদারক এক ঘটনার মধ্য দিয়ে। নিজের প্রিয় ঘোড়াটির মৃত্যুর পর বিলাপরত লানিয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পোষ্যের জন্য এমন ভালোবাসা দেখে তার প্রতি সমবেদনা জানান নেটিজেনরা।

লানিয়ার বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন তার বাবা তাকে ‘জেসনো’ নামের একটি মাদি ঘোড়া উপহার দেন। এটা শুধু একটি পোষ্যই ছিল না, ছিল লানিয়ার বন্ধুও। লানিয়াকে ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের সবচেয়ে কম বয়সী ঘোড়সওয়ারি মনে করা হয়।

সম্প্রতি লানিয়ার ঘোড়াটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসার পাশাপাশি সে নিজেই পোষ্যটির সেবাযত্ন করছিল। সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় প্রাণিচিকিৎসক ঘোড়ার কাছে না যেতে লানিয়াকে পরামর্শ দেন। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শও তাকে প্রিয় পোষ্যের কাছ থেকে আলাদা করতে পারেনি।

চিকিৎসা আর লানিয়ার সেবাযত্নেও জেসনোকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। জেসনোর মৃত্যুর পর গলা জড়িয়ে বিলাপ করতে দেখা যায় লানিয়াকে। শুধু তাই নয়, ঘোড়াটিকে সমাহিত করার পর প্রায়ই আপেল আর চিনি নিয়ে কবরের কাছে দাঁড়িয়ে থাকত সে।

মৃত ঘোড়ার গলা জড়িয়ে বিলাপরত লানিয়ার হৃদয়স্পর্শী ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি নজরে আসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতোমের।

ঘোড়ার প্রতি এই ইরাকি বালিকার এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ হন শেখ মোহাম্মদ। তিনি লানিয়াকে কয়েকটি ঘোড়া উপহার দিয়েছেন। একই সঙ্গে তার জন্য একটি ঘোড়সওয়ার প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন।

খবরটি জানতে পেরে লানিয়ার বাবা ফাখির রসুল মোহাম্মদ বলেন, এখন লানিয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। পাঁচ বছর বয়স থেকেই এটা তার স্বপ্ন ছিল।