ইরানের প্রেসিডেন্টকে সফরের আমন্ত্রণ জানালেন সৌদি বাদশাহ
সৌদি আরব সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ তাঁকে এ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। গতকাল রোববার ইরান সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা টুইট করে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাইসি এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে ইরান ও সৌদি আরবের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বৈরিতা চলে আসছে। আঞ্চলিক শক্তি থেকে দুই দেশই তৎপর। তবে সম্প্রতি ইরান ও সৌদি আরবের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উষ্ণতা ছড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে চীন। ১০ মার্চ বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে ঐকমত্যে পৌঁছায় তেহরান ও রিয়াদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার ইরানের প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ জানাল সৌদি আরব।
ইরানের প্রেসিডেন্টের রাজনীতি-বিষয়ক ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ জামসিদি টুইটে জানান, প্রেসিডেন্ট রাইসিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বাদশাহ সালমান। এতে দুই দেশের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তিকে’ স্বাগত জানানোর পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট রাইসিকে সৌদি আরব সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। রাইসিও এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান রোববার জানান, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকের বিষয়ে সম্মত হয়েছে ইরান ও সৌদি আরব। এ জন্য তিনটি জায়গা সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এখনো জায়গা নির্ধারিত হয়নি।
২০১৬ সালে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল সৌদি আরব। ওই বছর সৌদি আরব ১ দিনে ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন শিয়া মুসলিম। এ তালিকায় ছিলেন প্রভাবশালী শিয়া ধর্মীয় নেতা নিমর আল-নিমরও। এ নিয়ে দুই দেশ প্রকাশ্যে বিরোধে জড়ায়। ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। ইরানে বিক্ষোভকারীরা সৌদি আরবের দূতাবাসে হামলা করেন। ওই ঘটনার জেরে ইরান ও সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্কে ইতি টানে।
এ ছাড়া আট বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইয়েমেন যুদ্ধে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে ইরান ও সৌদি আরব। ইয়েমেন সরকারের পক্ষে রয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন ইরান-সমর্থিত হুতি যোদ্ধারা।
অবশেষে দীর্ঘদিনের বৈরী সম্পর্ক জোড়া লাগাতে রাজি হয়েছে সৌদি আরব ও ইরান। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে দুই দেশের কর্মকর্তাদের বৈঠক শেষে ১০ মার্চ এ বিষয়ে একমত হন তাঁরা।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএ জানায়, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে বৈঠকের ফলে আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশ দুটি কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করতে এবং দূতাবাসগুলো আবার খুলতে রাজি হয়েছে।