ইরানকে জাতিসংঘের নারী অধিকার পর্ষদ থেকে সরানো হলো

নীতি পুলিশের হেফাজতে মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে
ছবি: এএফপি

জাতিসংঘের নারী অধিকারবিষয়ক পর্ষদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ইরানকে। পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিক্ষোভে ইরান যে দমনপীড়ন চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ এ পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে জাতিসংঘের নারীবিষয়ক একটি পর্ষদ থেকে তেহরানকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কলকাঠি নেড়েছে বলে অভিযোগ ইরানের।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশ হেফাজতে মারা যান মাসা আমিনি। তাঁর বিরুদ্ধে হিজাব নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। মাসার মৃত্যুর পর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ বিক্ষোভ কঠোরভাবে দমন করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন হাজারো ব্যক্তি। এ ছাড়া বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ইরানের এ দমনপীড়ন নীতির সমালোচনা করছে পশ্চিমারা।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলের এক ভোটাভুটিতে ইরানকে ওই কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার পক্ষে ভোট দেয় বেশির ভাগ সদস্যরাষ্ট্র। এদিকে নারী অধিকারবিষয়ক কমিটি থেকে বাদ দেওয়ায় জাতিসংঘের তীব্র সমালোচনা করে একে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে উল্লেখ করেছে তেহরান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এটি একতরফা পদক্ষেপ। রাজনৈতিক দাবি চাপিয়ে দেওয়ার এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনী পদ্ধতিকে উপেক্ষা করার চেষ্টা। কমিশনের একজন বৈধ সদস্যকে অপসারণ করা রাজনৈতিক চেষ্টা, যা এই আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অসম্মান করে এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অপব্যবহারের জন্য একতরফা পদ্ধতি তৈরি করবে।

গত এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের চার বছর মেয়াদি এই পর্ষদে সদস্য নির্বাচিত হয় ইরান। তবে ইরানকে অপসারণের পক্ষে ২৯ সদস্য ভোট দেয়। ৮ জন ইরানের পক্ষে ভোট দেয়। এর মধ্যে রাশিয়া ও চীন ইরানের পক্ষে ছিল। ১৬ সদস্য ভোটদানে বিরত ছিল।

ইরানের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কাউন্সিলের প্রধান কাজেম ঘারিবাদি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই রেজল্যুশনকে সমর্থন করার উদ্দেশ্য তার নিজস্ব স্বার্থ রক্ষা করা। তিনি টুইট করে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কপট বিবৃতি যুক্তরাষ্ট্র তার অমানবিক এবং মানবাধিকারবিরোধী স্বার্থ এবং লক্ষ্য অর্জন করতে চায়।

আরও পড়ুন