লেবানন থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহার করল ইসরায়েল

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের লড়াই চলছেফাইল ছবি: রয়টার্স

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে লেবানন থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল। সেখানে লেবাননের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এ তথ্য জানিয়েছে।

সেন্টকম এক বিবৃতিতে বলেছে, সেন্টকমের নেতা জেনারেল এরিক কুরিলা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে আল-খিয়াম শহর থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং সেখানে লেবাননের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতিস্থাপনের সময় বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ সদর দপ্তরে উপস্থিত ছিলেন।

কুরিলার উদ্ধৃতি দিয়ে সেন্টকমের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শত্রুতার স্থায়ী অবসান নিশ্চিতে এটি প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সংঘাত বন্ধে এটি ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দক্ষিণাঞ্চলে সেনা মোতায়েনের প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে আজ (বুধবার) খিয়াম ও মারজায়ুন এলাকায় সেনা পাঠানোর বিষয়টি ছিল গুরুত্বপূর্ণ।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে নাজিব মিকাতি বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টাকে স্যালুট জানাই।’

এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের ৭ম ব্রিগেড দক্ষিণ লেবাননের খিয়ামে তাদের অভিযান শেষ করেছে। ইসরায়েলি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির সমঝোতা অনুসারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে লেবাননের সেনাদের খিয়াম এলাকায় নিয়ে সেখানে লেবাননে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তী বাহিনীর (ইউএনএফআইএল) সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে। এই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন রয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের লড়াই চলছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে লড়াই তীব্র আকার ধারণ করে। ইসরায়েল আগে সীমান্তে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মধ্যে লড়াই সীমিত রাখলেও সেপ্টেম্বরে স্থল অভিযান শুরু করে। এতে বিপুল পরিমাণ মানুষ নিহত ও আহত হন।

গত ২৭ নভেম্বর উভয় পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা এখনো বহাল আছে। তবে উভয় পক্ষই একে অপরের ওপর বারবার এই চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবানন থেকে সম্পূর্ণভাবে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। সেখানে লেবাননের সেনাবাহিনী এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে।

শর্ত অনুসারে হিজবুল্লাহকেও সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তরে লিতানি নদীর উত্তরে তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে এবং দক্ষিণ লেবাননে তাদের সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলতে হবে।