দুই জিম্মিকে ছাড়তে চেয়েছিল হামাস, ‘নিতে রাজি হয়নি’ ইসরায়েল
মানবিক দিক বিবেচনায় জিম্মি দুই ইসরায়েলিকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল ফিলিস্তিনের গাজার প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিতে রাজি হয়নি বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। অবশ্য হামাসের এ দাবিকে ‘জঘন্য প্রচারণা’ বলে মন্তব্য করেছে ইসরায়েল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে গতকাল শনিবার হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেন, ‘মানবিক দিক বিবেচনায় নোরিত ইতশাক ও ইয়োখেফেদ লিফশিৎজকে আমরা মুক্তি দিতে চাই বলে গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের কাতারের ভাইদের জানিয়েছিলাম। এর বিনিময়ে আমরা কিছুই চাই না। কিন্তু ইসরায়েলের দখলদার সরকার তাদের নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।’
এর আগে গত শুক্রবার জিম্মি দুই মার্কিন নাগরিক জুডিথ রানান (৫৯) এবং তাঁর মেয়ে নাতালি রানানকে (১৮) মুক্তি দেয় হামাস। তাঁদের মুক্তির বিষয়ে মধ্যস্থতা করেছিল কাতার।
এদিকে দুই জিম্মিকে গ্রহণ করতে ইসরায়েলের অস্বীকৃতির কড়া সমালোচনা করেছেন হামাসের মুখপাত্র খালেদ আল-কাদ্দোমি। তিনি বলেছেন, এ থেকে প্রমাণিত হয় রক্তপাত বন্ধে আগ্রহী নয় ইসরায়েল।
খালেদ আল-কাদ্দোমি বলেন, ‘অত্যন্ত মানবিক অবস্থা বিবেচনায় আমরা তাঁদেরকে (দুই জিম্মি) আমাদের ভাই কাতারের মাধ্যমে নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে চেয়েছিলাম। আমরা গত রাতে বিষয়টি অবহিত করেছি। আমরা এর বিনিময়ে কিছুই দাবি করিনি।’
খালেদ আল-কাদ্দোমি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইসরায়েলি সরকার তাঁদের গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। এতে প্রমাণিত হয়, দখলদার সরকার আন্তরিক নয় এবং তারা রক্তপাত বন্ধে প্রস্তুত নয়।’
হামাসের বক্তব্যের জবাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা হামাসের জঘন্য প্রচারণার জবাব দেব না। অপহরণের শিকার ও নিখোঁজ সবাইকে ফেরত আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ আমরা অব্যাহত রাখব।’
ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর আকস্মিক ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এ সময় হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাসহ দুই শতাধিক ব্যক্তিকে বন্দী করেন। ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করে আনতে এসব ব্যক্তিকে বন্দী করা হয়েছে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জবাবে এর পর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ এবং বিরামহীন বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে চার হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের ৭০ ভাগই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ।