ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানে তাপের উৎস খুঁজে পেয়েছে তুরস্কের ড্রোন
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিয়ে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানে তাপের উৎস শনাক্ত করেছে তুরস্কের একটি ড্রোন। তুরস্ক বলছে, এটি হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ থেকে আসতে পারে। হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ থেকে তাপের উৎসের সন্ধান পেয়েছে বলে জানা গেছে।
ইরানে গতকাল রোববার রাতে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর আজ সোমবার ভোর পর্যন্তও দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানের খোঁজ পাওয়া যায়নি। চলছে তল্লাশি অভিযান।
আজ সোমবার ভোরের দিকে উজ্জ্বল রঙের জ্যাকেট পরে, মাথায় টর্চ জ্বালিয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেঁটে উদ্ধারকারীদের তল্লাশি চালানোর ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একজন আঞ্চলিক সেনা কমান্ডার বলেন, ঘটনাস্থলের প্রতি ইঞ্চি ভূমিতে তল্লাশি চালানো হবে। ওই পাহাড়ি এলাকায় তীব্র শীত পড়েছে। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে আছে চারপাশ। অনেক বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি ধীরে ধীরে তুষারে রূপ নিচ্ছে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলু নিউজ এক এক্স বার্তায় জানায়, ইরানের পাহাড়ি এলাকায় তুরস্কের একটি উদ্ধারকারী ড্রোন তাপের উৎসের সন্ধান পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের। সেখানে উদ্ধার তৎপরতায় জড়িত ব্যক্তিদের এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গতকাল আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।
পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়। পাহাড়ি এলাকায় চলছে ব্যাপক তল্লাশি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইরানের কর্মকর্তারা।
এখনকার অনিশ্চিত পরিস্থিতি জানাতে গিয়ে ইরানের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এখনো আশাবাদী। তবে ঘটনাস্থল থেকে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তা বেশ উদ্বেগজনক।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে এক কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়েছে, বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটি থেকে অন্তত একজন আরোহী ও একজন ক্রু উদ্ধারকারীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। তবে তাঁরা কারা, সেটা জানানো হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, যা–ই ঘটে থাকুক না কেন, রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে কোনো ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে না। ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প ও পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত খামেনির কাছ থেকেই আসে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে আরও বলা হয়েছে, মূলত বৈরী আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এখনো আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় তল্লাশি অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। রাইসি ও আব্দোল্লাহিয়ান যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত বেল-২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করছিলেন।