হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর শর্তে যুদ্ধবিরতি করতে চায় ইসরায়েল

লেবাননের খিয়াম গ্রামে ইসরায়েলের বোমা হামলার পর কয়েকটি ভবনে আগুন ধরে যায়ছবি : এএফপি

লেবাননে যুদ্ধবিরতি নিয়ে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি নথি হস্তান্তর করেছে ইসরায়েল। লেবাননে যুদ্ধ থামাতে তাতে কূটনৈতিক সমাধানের কথা বলা আছে। তবে এতে তাদের শর্ত রয়েছে। গতকাল রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওএস যুক্তরাষ্ট্রের দুজন ও ইসরায়েলের দুজন কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।

যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে ইসরায়েলের শর্ত হচ্ছে, তাদের সেনাবাহিনী আইডিএফকে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লেবাননে অভিযান চালানোর সম্পূর্ণ অনুমতি দিতে হবে। হিজবুল্লাহ যাতে আবার সংগঠিত হতে না পারে এবং ইসরায়েল সীমান্তে সামরিক স্থাপনা গড়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হতে না পারে, সে জন্য ইসরায়েলি সেনারা লেবাননে অভিযান চালাবেন। এ ছাড়া ইসরায়েলি বিমানবাহিনীকে লেবাননের আকাশসীমায় অভিযান চালানোর স্বাধীনতা থাকতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা এক্সিওএসকে বলেছেন, ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতির জন্য যে শর্ত দিয়েছে, তাতে লেবানন বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাজি হবে বলে মনে হয় না।

ইসরায়েলের এ শর্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। লেবাননের দূতাবাসও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু করেছে। হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ চেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হিসেবে হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত আমোস হোচস্টেইন সোমবার বৈরুত সফর করছেন। এ ছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশে রওনা দেন। হোচেস্টেইন লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এবং পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির সঙ্গে আলোচনা করবেন। বেরি বলেছেন, হোচস্টেইনের সফর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর শেষ সুযোগ। তিনি আরও বলেন, এর আগে ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে শেষ বড় যুদ্ধের অবসান ঘটানো চুক্তি থেকে কোনো ধরনের বিচ্যুতি হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

এর মধ্যেও লেবাননের বৈরুত ও ফিলিস্তিনের গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আজ সোমবার ইসরায়েলি বাহিনী বাস্তুচ্যুত লোকজনের জন্য স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র থেকে শুরু করে গাজা ও বৈরুতে হামলা করেছে। তারা লোকজনকে আটক করার পাশাপাশি এলাকা ছাড়তেও নির্দেশ দিয়েছে। গাজার জাবালিয়ার বাসিন্দা ও ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলছেন, ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতালের পাশে একটি স্কুলে হামলা করে লোকজনকে আটক করেন এবং তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।

হোচেস্টেইনের সফরে কোনো আশার আলো দেখছেন না লেবাননের বাসিন্দারা। একটি গাড়ির ওয়ার্কশপের মালিক ৬১ বছর বয়সী টনি রাওয়ানদোস বলেন, ‘এটা সময়ের অপচয়। আমরা কি হিজবুল্লাহর অস্ত্র থেকে মুক্তি পাব? হোচেস্টেইন কিছুই করতে পারবেন না।’