বিশ্বকাপে দেশের হার উদ্যাপন করায় ইরানে একজনকে গুলি করে হত্যা
ইরানের উত্তরাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভকারীরা যখন ফুটবল বিশ্বকাপ থেকে দেশের বিদায় প্রকাশ্যে উদ্যাপন করছিলেন, তখন এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির
অধিকার কর্মীরা বলেছেন, গত মঙ্গলবার রাতে বানদার আনজালিতে নিজের গাড়ির হর্ন বাজিয়ে উদ্যাপন করলে মেহরান সামাকের মাথায় গুলি করা হয়।
একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, লোকজন সড়কে জড়ো হয়ে নেচে-গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। অনেক ইরানি নাগরিক কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের ফুটবল দলকে সমর্থন দিতে রাজি নন। তাঁরা মনে করছেন, ফুটবল দল ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকেই প্রতিনিধিত্ব করছে।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় ইরান। এই পরাজয়ের জন্য খেলোয়াড়দের ওপর ভেতরে-বাইরে থেকে বিরোধী শক্তির অনৈতিক চাপকে দায়ী করছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সংগীত গাননি ইরানের খেলোয়াড়েরা। বলা হচ্ছিল, ইরানের বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে তাঁরা জাতীয় সংগীত গাননি। ওই ম্যাচে দলটি ইংল্যান্ডের কাছে ৬-২ গোলে হেরে যায়।
তবে ওয়েলসের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে জাতীয় সংগীত গেয়েছিলেন ইরানের খেলোয়াড়েরা। ওই ম্যাচে তাঁরা ২-০ গোলে জয় পান। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের ম্যাচটি রাজনৈতিক শোডাউনে রূপ নেয়। ওই ম্যাচের আগেও জাতীয় সংগীত গেয়েছিলেন খেলোয়াড়েরা।
পরের দুই ম্যাচে খেলোয়াড়দের জাতীয় সংগীত গাওয়াকে প্রতারণা হিসেবে দেখেন কিছু বিক্ষোভকারী। কারণ, এই ইস্যুতে দলের ওপর ইরান সরকারের চাপ তীব্রতর হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
ইরানে ১০ সপ্তাহ আগে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। সঠিকভাবে হিজাব না পরায় তেহরানে মাসা আমিনি নামের ২২ বছর বয়সী এক তরুণীকে থানা হেফাজতে নেয় নৈতিকতা পুলিশ। হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হলে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সরকারি বাহিনীগুলো কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমনে নামে। নরওয়েভিত্তিক সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, বিক্ষোভে ৬০ শিশুসহ কমপক্ষে ৪৪৮ জন নিহত হয়েছেন। ১৮ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।