ধ্বংসস্তূপে ১০৪ ঘণ্টা কাটানোর পর বেঁচে ফিরলেন নারী
তুরস্কে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের ভেতরে ১০৪ ঘণ্টা আটকে থাকার পর এক নারী জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার কিরিখান শহরের একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে জিনেপ কাহরামান নামের ওই নারী উদ্ধার হন।
কাহরামানের বয়স ৪০ বছর। শুক্রবার তাঁকে যখন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন উদ্ধারকারীদের চোখে–মুখে ছিল স্বস্তির চিহ্ন। উদ্ধারকারী দলের নেতা স্টিভেন বায়ের বলেন, ‘এখন আমি অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা দেখতে পাচ্ছেন লোকজন কান্না করছে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরছে। এমন অবস্থার মধ্যেও এতটা ভালোভাবে ওই নারীকে বের করে আনতে পারায় অনেক স্বস্তি বোধ হচ্ছে। এটি পুরোপুরি অলৌকিক ঘটনা।’
উদ্ধারকারী তত্ত্বাবধায়ক তামারা রিদার বলেন, ‘ওই নারীকে টেনে বের করা হয়েছে। তিনি হাল ছেড়ে দেননি। আমরা সবাই অনেক কৃতজ্ঞ যে তিনি এখন এ অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে আছেন। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।’
এর আগে কাহরামানের পরিবার রয়টার্সকে বলেছিল, সোমবার ভূমিকম্প হওয়ার পর তারা দুই দিন ধরে উদ্ধারকারীদের জন্য অপেক্ষা করে ছিল।
জার্মান উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসাবশেষে আটকে থাকা জিনেপ কাহরামানের সঙ্গে যোগাযোগে সক্ষম হন। একটি পাইপের সাহায্যে তাঁকে পানি দেওয়া হচ্ছিল। একপর্যায়ে উদ্ধারকর্মীদের সহায়তায় কাহরামের ছোট বোন একটি মই বেয়ে নিচে নেমে বোনের সঙ্গে কথা বলেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাহরামান উদ্ধার হওয়ার পর জার্মান ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ (আইএসএআর) দলের এক কর্মীকে জড়িয়ে ধরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর পাঁচ দিন পেরিয়ে গেছে। আজ শনিবার সকালে তুরস্ক ও সিরিয়ার সরকারি সূত্র ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গত সোমবার ভোরে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্কে ২০ হাজার ২১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর সিরিয়ায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৫০০ জন। ফলে দুই দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৭১৩ জনে।