ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত আরও তীব্রতর হচ্ছে। ইসরায়েলি বোমা হামলায় রোববার এক দিনেই ২৬৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পশ্চিম তীরেও ছড়িয়ে পড়েছে সংঘাত। হিজবুল্লাহর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইরান সতর্ক করেছে আঞ্চলিক সংঘাতের বিষয়ে। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে যুক্তরাষ্ট্র। একনজরে দেখে নেওয়া যাক এ নিয়ে আলোচিত পাঁচ খবর।
ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায় গাজা উপত্যকা পরিণত হয়েছে ‘নরকের কুণ্ডে’। এবার ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে পশ্চিম তীরেও। পাশাপাশি সেখানে নিয়মিত ঘটছে হত্যাকাণ্ড, ধরপাকড় ও নির্যাতন-নিপীড়ন। গাজার মতো পশ্চিম তীরের শরণার্থীশিবির ও মসজিদও হামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এদিকে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত) গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৬৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১১৭ জনই শিশু। ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিরামহীন হামলায় প্রতিদিন এত ফিলিস্তিনি হতাহত হচ্ছেন যে এ হাসপাতালে তাঁদের রাখা বা ঠাঁই দেওয়ার জায়গা হচ্ছে না। লাশে হাসপাতালের হিমঘরগুলো ভরে গেছে। গাজা উপত্যকার দেইর আল বালাহ এলাকার আল-আকসা হাসপাতালের একজন চিকিৎসাকর্মী বলেন, ‘লাশ এত বেশি যে কাফনের কাপড়ও যথেষ্ট পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে থাকা লাশগুলো বোমার আঘাতে এতটাই থেঁতলে ও বিকৃত হয়ে গেছে যে চেনা যায় না।’
ইসরায়েলি বাহিনী টানা দুই সপ্তাহ গাজায় বিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। সেখানে স্থল অভিযানের প্রস্তুতিও নিয়েছে দেশটি। এ অবস্থায় ইসরায়েল অবিলম্বে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ না করলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান রোববার তেহরানে বলেছেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্র ও এর প্রতিনিধিকে (ইসরায়েল) সতর্ক করছি যে তারা যদি অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ না করে, তাহলে যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো কিছু সম্ভব এবং পুরো অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।’
গাজায় ইসরায়েলের হামলার মধ্যে হিজবুল্লাহর তৎপরতায় দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই নতুন করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ খুব বিপজ্জনক ভূমিকা নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র জনাথন কনরিকস। তিনি বলেন, ‘হিজবুল্লাহ খুব-খুব বিপজ্জনক খেলা খেলছে। তারা পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলছে এবং আমরা প্রতিদিন আরও বেশি হামলার ঘটনা দেখছি।’
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত আঞ্চলিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে সহায়তায় মধ্যপ্রাচ্যে আরও সমরাস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। এবার এ অঞ্চলে ‘টার্মিনাল হাই অ্যালটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স’ বা ‘থাড’ নামে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। এ ছাড়া সেখানে অতিরিক্ত ‘প্যাট্রিয়ট’ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও মোতায়েন করা হবে। এর আগে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত শুরু হওয়ার পর এই অঞ্চলে যুদ্ধবিমানবাহী রণতরি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মোতায়েন করা হয়েছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমানসহ নানা অস্ত্র।