ইরানে আরও ৩ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
ইরানে আরও তিন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। গত বছর সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় তাঁদের এ শাস্তি দেওয়া হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে ইরান সরকার।
ইরানের বিচার বিভাগীয় খবর প্রকাশকারী মিজান অনলাইনের ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মজিদ কাজেমি, সালেহ মীর হাশেমি ও সাঈদ ইয়াগুবি। তবে কীভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, সেটি জানানো হয়নি। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ইস্পাহান প্রদেশের একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও আধা সামরিক বাহিনীর দুজনকে হত্যা করেছিল তারা।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, গ্রেপ্তারের পর মজিদ কাজেমি, সালেহ মীর হাশেমি ও সাঈদ ইয়াগুবিকে নির্যাতন করা হয়েছিল। এ ছাড়া জোর করে তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিও আদায় করা হয়েছে।
গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে মাসা আমিনি (২২) নামের এক তরুণীর মৃত্যু হয়। হিজাব নীতি না মানার অভিযোগে এর তিন দিন আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পর থেকে দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ করছে ইরান সরকার।
বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই গোপন আদালতের মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্যমতে, চীন ছাড়া অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় প্রতিবছর বেশি মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান।
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এবং প্যারিসভিত্তিক টুগেদার অ্যাগেইনস্ট দ্য ডেথ পেনাল্টি এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, গত বছর ইরান অন্তত ৫৮২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে, যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ। ২০২১ সালে ৩৩৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।