গাজায় ‘সন্ত্রাসীদের ভূগর্ভস্থ শহর’ খুঁজে পাওয়ার দাবি ইসরায়েলের
ফিলিস্তিনের গাজা নগরীতে একটি বড় ধরনের সুড়ঙ্গের নেটওয়ার্ক খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। দেশটির ভাষ্য, একসময় হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা এ সুড়ঙ্গ ব্যবহার করতেন। একে ‘সন্ত্রাসীদের ভূগর্ভস্থ শহর’ (আন্ডারগ্রাউন্ড টেররিস্ট সিটি) বলে উল্লেখ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এ ছাড়া গাজা নগরীর ‘অভিজাত এলাকা’ হিসেবে পরিচিত আল-রিমালের প্যালেস্টাইন স্কয়ারের চারপাশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)।
কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে আইডিএফ বলেছে, এখান থেকেই ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাসের ‘প্রশাসনিক ও সামরিক নেতৃত্ব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন’। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া, সামরিক নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও মোহাম্মদ দেইফ গাজা নগরীর এ জায়গায় অবস্থান করতেন।
আর প্যালেস্টাইন স্কয়ারের ঠিক নিচে রয়েছে সুড়ঙ্গের এক বিশাল নেটওয়ার্ক। একে ‘কৌশলগত সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক’ অভিহিত করে ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এর সঙ্গে রানতিসি হাসপাতাল ও শিফা হাসপাতালসংলগ্ন এলাকার ভূগর্ভস্থ অবকাঠামোর সংযোগ রয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে গাজা নগরীর কয়েকটি সুড়ঙ্গের প্রবেশমুখ চিহ্নিত করে দেখানো হয়েছে। এসব জায়গা শনাক্ত করছেন ইসরায়েলি সেনারা, তবে এসব সুড়ঙ্গের সঙ্গে হাসপাতালের সংযোগ রয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ দেখানো হয়নি।
সম্প্রতি গাজায় একটি বড় সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়ার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, এরেজ সীমান্ত ক্রসিং থেকে কয়েক শ মিটার দূরে সুড়ঙ্গটির প্রবেশমুখের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর দৈর্ঘ্য চার কিলোমিটারের বেশি বা প্রায় আড়াই মাইল। সীমান্ত এলাকায় এ পর্যন্ত হামাসের যেসব সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া গেছে, সেগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়।
গাজা উপত্যকা দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে। সেখানে পণ্য ও ব্যক্তির প্রবেশ কিংবা সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য ইসরায়েলের অনুমতি দরকার হয়। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় গোপনে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য এসব সুড়ঙ্গ ব্যবহার করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ইসরায়েলের দাবি, হামাসের সশস্ত্র কর্মকাণ্ড পরিচালনায় এসব সুড়ঙ্গ ব্যবহার করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলার পর থেকে এসব সুড়ঙ্গ ধ্বংসে উঠেপড়ে লেগেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ জন্য সাগরের পানি সুড়ঙ্গে ভরতে শুরু করেছে তারা।