কেন সাংবাদিকতা ছাড়লেন মার্কিন নাগরিক মালাক সিলমি

ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন মালাক সিলমি যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বসবাস করেন। ওই রাজ্যের ওয়েন স্টেট ইউনির্ভাসিটি থেকে তিনি সাংবাদিকতা এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতক করেন। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। বর্তমানে তিনি ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছেন । গত ২৮ জানুয়ারি তিনি লিখেছেন আল জাজিরায়

মালাক সিলমিছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

যুক্তরাষ্ট্রের যেসব শহরে আরব জনগোষ্ঠীর বড় অংশ বসবাস করে, সেসব শহরের একটি হচ্ছে মিশিগানের ডিয়ারবর্ন। আমার মতো লোকজন চারপাশে থাকলেও আমি যখন সাংবাদিকতায় ভর্তি হই, তখন দেখলাম আমি একা। অন্যরা প্রকৌশলবিদ্যা ও চিকিৎসার মতো নানা বিষয়ে পড়তে চলে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আমি এমন এক শহরে বড় হয়েছি, যেখানকার মানুষ গণমাধ্যমে যেসব খবর আসে, সেগুলোয় একেবারেই বিশ্বাস করে না। কারণ, এখানে মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম এবং আরব সম্প্রদায় নিয়ে বছরের পর বছর ভুল ও আসল তথ্য আড়াল করে খবর ছাপা হয় বা প্রচার করা হয়। বেশির ভাগ সময় আমরা খবরের পাতায় আমাদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন বা সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিতে দেখেছি। তাই আমি যেসব আরব পরিবারের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি, তাদের কখনোই এসব খবরে কান দিতে দেখিনি।

২০০০ সালে বাবা পরিবার নিয়ে এ শহরে চলে আসেন। যে মানুষটি নানা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন, থিতু হওয়ার কথা মাথায় আসেনি, নাইন–ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর সে মানুষটির পরিবার হয়ে যায় স্থায়ী ঠিকানা। তিনি পরিবারকে যেন আঁকড়ে ধরলেন এবং কোথাও সরতে চাইলেন না। মনে মনে এই শহরের চারপাশে গড়ে তুললেন নিরাপত্তাবলয়, যা তিনি খুব কমই অতিক্রম করেছেন।

নাইন–ইলেভেনের সময় আমার বয়স ছিল মাত্র দুই বছর। তাই সে সময় এর কী প্রভাব পড়েছিল, আমার মনে নেই। কিন্তু আমি বলতে পারি, আমি এমন একটি পরিবারে বড় হয়েছি, যারা জর্ডান ও ফিলিস্তিন ছাড়া কোথাও যায়নি। গ্রীষ্মের ছুটিতে মানুষ ম্যাকিনাক দ্বীপে বেড়াতে যেত। আর আমি ২১ বছর বয়স পর্যন্ত সেখানে পা রাখিনি।

আমরা কাছের গ্রেট লেকে ঘুরতে গিয়েছি। কিন্তু আড়াই ঘণ্টার দূরত্বে লেক মিশিগান দেখতে যাইনি। কারণ, সেখানে যেতে হলে বেশ কয়েকটি রিপাবলিকান কাউন্টির ওপর দিয়ে যেতে হবে। আর বাবা মনে করতেন, আমি ও মা যেহেতু হিজাব পরি, তাই আমাদের নানা ধরনের কটুকথা শুনতে হতে পারে, যা থেকে তিনি আমাদের রক্ষা করতে পারবেন না।

আমার সম্প্রদায়ের মানুষের ‘সংকীর্ণ’ মানসিকতা নিয়ে আমি বেশ ক্ষুব্ধ ছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছি, কেন আমার মা–বাবা আমাদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের ভয়ের একটি কারণ ছিল আফগানিস্তান ও ইরাকে আগ্রাসন নিয়ে মার্কিন গণমাধ্যমের খবর এবং আরেকটি হলো নাইন–ইলেভেনের পর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের আড়ালে মুসলিমদের শোষণে পশ্চিমা নানা নীতি।

ছাপা প্রতিবেদনটি দেখার পর মনে হয়েছিল, খালি অ্যাপার্টমেন্টে চিৎকার করে কাঁদি। মনে হয়েছিল, কেউ আমার কণ্ঠ বন্ধ করে দিয়েছে। আমি বিক্ষোভকারী সেই মানুষদের কাছে লজ্জায় মরে যাচ্ছিলাম।

এ অবস্থা বদলাতে আমি সাংবাদিক হতে চেয়েছি। আমি সঠিক গল্পটা তুলে ধরতে চেয়েছিলাম এবং ক্ষমতায় থাকা মানুষদের জবাবদিহি করতে চেয়েছিলাম।

কলেজে পড়ানো হয়েছিল, সাংবাদিকতা সরকারের নীতিতে পরিবর্তন ঘটাতে পারে, তাদের গোপন কার্যকলাপ, মিথ্যা প্রকাশ করতে পারে এবং অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে মুক্ত করতে পারে। এসব কথা আমার মনে দাগ কেটে যায়। আমি এই ক্ষমতাকে আমার নিজের ও আমার সম্প্রদায়ের জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছি, যারা দিনের পর দিন গণমাধ্যম ও সরকারের নিন্দার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

আমি ক্যাম্পাস পত্রিকায় গল্প লিখতে শুরু করলাম, প্রতিবেদনও করতাম। মিশিগানের কয়েকটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন করেছি। এমনকি নিউইয়র্ক টাইমসে দুই সপ্তাহের ইন্টার্ন করারও সুযোগ পেয়েছিলাম।

পরিবার আমার এই সাংবাদিকতা বেশ উপভোগ করছিল। কলেজের পাঠ শেষে ২০২১ সালে টেক্সাসে একটি স্থানীয় পত্রিকায় আমার পূর্ণকালীন চাকরি হয়। সেখানকার নিউজ রুমে আমি একমাত্র মুসলিম ও ফিলিস্তিনি ছিলাম। আমি ব্রেকিং নিউজ ও ট্রেন্ডিং বিষয়ে এক বছরে সেখানে প্রায় ৪০০টি প্রতিবেদন করেছিলাম।

এসব প্রতিবেদনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন ছিল, যেটি করব কি না, তা নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিলাম। পরে এ জন্য অনুতপ্ত হয়েছি। সেটি ছিল একটি গির্জার মাধ্যমে ইসরায়েলের জন্য তহবিল সংগ্রহের প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের।

গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল
ছবি: রয়টার্স

খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আমি নিজে ঘটনার ছবি তুলেছি, অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বেশির ভাগই ছিলেন ফিলিস্তিনি। পুরো ঘটনা অল্প কথার মধ্য দিয়ে যতটুকু পেরেছি, তুলে ধরেছি। সাধারণত যখন সংবাদ সম্পাদনা হয় আমি দেখি, কিন্তু সেই ঘটনার প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পর আমি দেখেছি।

সেখানে বিক্ষোভকারীদের উদ্বেগ ও ইসরায়েলি দখলদারির অধীনে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের বিষয়ে পাঠকদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। অন্যান্য বিক্ষোভের মতোই এটি ছাপা হয়েছিল। যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে অনেক অংশ ফেলে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবেদনে গির্জার প্রতিষ্ঠাতা, যিনি ইহুদিবিদ্বেষ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তাঁর বক্তব্য ছাপা হয়েছে। কিন্তু ফিলিস্তিনি যাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল, তাঁদের কোনো মন্তব্য ছাপা হয়নি।

ছাপা প্রতিবেদনটি দেখার পর মনে হয়েছিল, খালি অ্যাপার্টমেন্টে চিৎকার করে কাঁদি। মনে হয়েছিল, কেউ আমার কণ্ঠ বন্ধ করে দিয়েছে। আমি বিক্ষোভকারী সেই মানুষদের কাছে লজ্জায় মরে যাচ্ছিলাম। তাঁরা বলেছিলেন, প্রতিবেদনটি গির্জার নজর থেকে দেখা হয়েছে। আমার মনে হয়েছিল, আমি এই সমস্যার অংশ, সমাধানের অংশ নই। এখান থেকে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা হলো আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির স্থানীয়করণ করা থেকে সরে আসা। কিন্তু এর কয়েক মাস পর দেখা গেল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের খবর স্থানীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে।

আমাকে কিছু প্রতিবেদন করতে দেওয়া হয়েছে, যেমন স্থানীয় একটি পানশালা রুশ ভদকা বর্জন করেছে এবং ইউক্রেনে হামলায় আহত এক সাংবাদিক একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমি কাজের ঝামেলা বাসায় নিয়ে আসতে চাইতাম না। কিন্তু আমি ব্যর্থ হলাম। আমার স্বামী আমার হতাশার কথা শুনলেন, তিনি আমাকে সান্ত্বনা দিলেন।

দেখলাম, আমি যে সাংবাদিকতার অংশ হতে চেয়েছিলাম তা সম্ভব ছিল। কিন্তু দেখলাম তাদের যে মানদণ্ড, তা আমার সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য প্রয়োগ করা যাবে না।...আমি দেখলাম অন্যদের জন্য যেটা সম্ভব, সেটা ফিলিস্তিনিদের জন্য নয়।

প্রধান সম্পাদকের সঙ্গে কথার বৈঠক এবং ‘ভেতর থেকে’ পরিবর্তন আনার চেষ্টা করতে গিয়ে আমি আওয়াজ তুলেছি। কিন্তু সব ব্যর্থ হয়েছে। এভাবে কয়েক মাস চলার পর হতাশা থেকে আমি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।

গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল, ৭ ডিসেম্বর
ফাইল ছবি: এএফপি

আমার অভিজ্ঞতা নতুন কোনো নজির নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো ইসরায়েলের প্রতি ব্যাপক পক্ষপাতদুষ্ট। সেখানে ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠস্বর খুব কমই পত্রিকায় ছাপা হয় বা টেলিভিশনে সম্প্রচার হয়। আর যখন এটি করতে গেছে, তখনই সেন্সরশিপের মুখোমুখি হতে হয়েছে। অনেক প্রকাশক তো সাবস্ক্রাইবার ও বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ার ভয়ও পান। আবার অনেকে বলেন, আমরা যে গল্প বলতে চাই সেটি খুবই জটিল, এটি পাঠককে টানবে না।

টেক্সাসে আমার অভিজ্ঞতার পর আমি মিশিগানে সাংবাদিকতার চাকরি নিই। সেখানে আমার বিষয় ছিল স্থানীয় সরকার।

গত আগস্টে আমি ফিলিস্তিনে গিয়েছিলাম আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে নানার সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়েছি। ১৯৪৬ সালে বেইত নাবালায় নানার জন্ম। দুই বছর পর নতুন রাষ্ট্র ইসরায়েলে ভিত্তি স্থাপন করতে গিয়ে ফিলিস্তিনে জাতিগত নির্মূলের সময় এই গ্রাম ইহুদি মিলিশিয়ারা ধ্বংস করে দিয়েছিল।

আমার নানা তাঁর মা–বাবার সঙ্গে পশ্চিম তীরে শরণার্থীশিবিরে নির্বাসিত হন। এখনো নানা সেখানেই আছেন।

আমি যখন স্কুলে তখন নানা আশা করতেন, আমি আইন বিষয়ে পড়ব আর ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে লড়ব। কিন্তু আমি যখন সাংবাদিকতায় ঢুকলাম, নানা ততটা খুশি হননি। আমার মনে হতো তিনি হয়তো ঠিক বিষয়টি বোঝেন না। তিনি কেবল জানতেন, ফিলিস্তিনের সাংবাদিকেরা প্রায়ই প্রতিবেদন করার সময় তাঁদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেন এবং পশ্চিমারা তাঁদের কণ্ঠকে শোনার চেষ্টাও করে না।

কিন্তু আমি একজন আরব আমেরিকান। আমি পশ্চিম তীর ও গাজা থেকে সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ এবং ওয়ায়েল দাহদোকে প্রতিবেদন করতে শুনছি। আয়মান মোহেলদিন এমএসএনবিসির একজন উপস্থাপক, যিনি অনেক অজানা গল্প পর্দায় নিয়ে আসেন। আমি তাঁদের সাহসিকতা এবং প্রচেষ্টা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস ছিল, গণমাধ্যমের জগতে পরিবর্তন আসছে এবং বিশ্ব মূল্যায়ন করতে শুরু করেছে।

ফিলিস্তিন থেকে চলে আসার কয়েক দিন আগে এক সন্ধ্যায় নানাভাই ওয়েবসাইটে ঢুকে আমার করা প্রতিবেদনগুলো পড়ছিলেন। তা দেখে হঠাৎ আমি খুব বিব্রত বোধ করছিলাম। এবং মন থেকে খুব বিশ্বাস করতে চাইলাম, একদিন আমি নানাভাই ও ফিলিস্তিনিদের জন্য ইতিবাচক ভিন্নতা আনতে পারব। মনে হলো তাঁর মতো মানুষের জন্য মানবিক হওয়ার জন্য এই গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়ে শুধু সময়ই নষ্ট করছি। বিশেষ করে আমার নানা যখন জাতিসংঘের দেওয়া তাঁবু, যেটি তাঁর মা–বাবা রেখে গেছেন, সেটিতে ৭৫ বছর ধরে আছেন।

মিশিগানে ফিরে আমাকে কাজে বিরতি দিতে হয়েছে। সামনে তাকিয়ে দেখলাম, যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে কাজ করব, এমন কোনো জায়গা আমার জন্য নেই। আমার হৃদয় ভেঙে গেল। ঠিক যে কারণে আমি সাংবাদিক হতে চেয়েছিলাম, ঠিক সে কারণেই তা থেকে নিজেকে মুক্তি দিলাম।

গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল
ফাইল ছবি

দেখলাম, ডিয়ারবোর্নে আমার সম্প্রদায়ের মানুষ এখনো ভুল তথ্যের শিকার হচ্ছে। তারা এখনো গণমাধ্যমকে বিশ্বাস করে না বা অনেক স্থানীয় বা জাতীয় সংবাদ পড়ে না। বেশির ভাগ গণমাধ্যম পরিবর্তনে আগ্রহী নয়। তারা বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে যাঁদের নিয়োগ দেবে, তাঁরা যদি বসের পিঠ চাপড়ানি পেতে চান, তাহলে আমার সম্প্রদায়কে অবহেলা করতে থাকেন।

আমি চাকরি ছেড়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ পরে হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে অভিযান শুরু করে। এর ফলে গাজায় ইসরায়েলের আরেকটি নৃশংস যুদ্ধ শুরু হয়। বেশির ভাগ খবর প্রকাশ করা হচ্ছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও সরকারের বরাত দিয়ে, নেই কোনো যাচাই–বাছাই।

মনে হচ্ছে, আমরা ২০০১ সালে ফিরে এসেছি। মার্কিন গণমাধ্যম আবারও সেই সম্প্রদায়ের ক্ষতি করছে, যারা একতরফা ও বিরুদ্ধ মনোভাবের প্রতিবেদনের কারণে তাদের গল্প শেয়ার করতে ভয় পায়। যারা আমাদের করের অর্থ দিয়ে গণহত্যার যুদ্ধকে সমর্থন ও অর্থায়ন করে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে আবারও ব্যর্থ হচ্ছে।

গত তিন মাস মার্কিন গণমাধ্যমে আমি যা দেখছি, তাতে সাংবাদিকতা থেকে আমার দূরের আরও অনেক কারণ খুঁজে পাচ্ছি।

আমি আশা ও বিশ্বাস করি, ছোট ছোট উদ্যোগ পরিবর্তন আনতে পারে। তবে আমার মনে হয় না, এ মুহূর্তে মার্কিন গণমাধ্যমশিল্পে কোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব।