গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে মধ্যস্থতাকারীই হতাশ
মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার গতকাল শনিবার স্বীকার করেছে, হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের নতুন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা সত্যিই আশাব্যঞ্জক নয়।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফা শহরে স্থল অভিযান চালানোর ব্যাপারে অনড় অবস্থানে ইসরায়েল। রাফায় স্থল অভিযান না চালাতে বৈশ্বিক আহ্বান ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।
গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার অর্ধেকের বেশি (১৪ লাখ) এখন মিসরের সীমান্তবর্তী শহর রাফায় অবস্থান করছেন। তাঁদের বেশির ভাগই বাস্তুচ্যুত হয়ে এই শহরে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, রাফাকে রেহাইয়ের আহ্বান জানিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো কার্যকরভাবে ইসরায়েলকে এই যুদ্ধে হারতে বলছে।
যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা গত সপ্তাহে জোরালো হয়। রাফায় ইসরায়েলি সেনা প্রবেশের আগেই একটি যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতে জোর তৎপরতা চালায় মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র।
গাজার শেষ প্রধান জনবহুল স্থান রাফা, যেখানে ইসরায়েলি স্থলসেনারা এখনো প্রবেশ করেননি।
রাফায় স্থল অভিযান না চালাতে গত সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েল প্রতি সরাসরি আবেদন জানিয়েছিলেন।
বাইডেনের এমন আবেদন সত্ত্বেও নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, হামাসের সঙ্গে জিম্মি মুক্তির চুক্তি (যুদ্ধবিরতি) হোক আর না-হোক, তা বিবেচনা না করেই রাফায় অভিযান চালানোর বিষয়টি এগিয়ে যাবে।
গতকাল টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যদি তা (যুদ্ধবিরতি চুক্তি) অর্জনও করি, আমরা রাফায় প্রবেশ করব।’
মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি গত সপ্তাহে ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এখন তিনি বলছেন, অনেক দেশের জেদের কারণে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা জটিল হয়ে পড়েছে।
গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা সম্পর্কে জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি বলেন, গত কয়েক দিনের আলামত সত্যিই খুব আশাব্যঞ্জক নয়।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সরকারি তথ্যের আলোকে এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েলে হামাসের এই হামলায় প্রায় ১ হাজার ১৬০ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে হামাস প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে। জিম্মিদের মধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গত নভেম্বরের শেষের দিকের এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় ছেড়ে দেয় হামাস।
ইসরায়েল বলেছে, গাজায় এখনো প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় ২৮ হাজার ৮৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।