গাজায় হামাস নেতাকে হত্যার জন্য হামলা, নিহত ৭১

আল–মাওয়াসি এলাকায় হামলার পর ঘটনাস্থলে মানুষের জমায়েতছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি ‘নিরাপদ এলাকায়’ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল বলছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে হত্যার জন্য আজ শনিবার ওই হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েল আর্মি রেডিও ও দেশটির একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকাকে নিরাপদ ঘোষণা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানেই একটি বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন মোহাম্মদ দেইফ। তবে হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামাসের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মনে করা হয় মোহাম্মদ দেইফকে। কয়েক দশক ধরে তিনি ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। এর আগে তাঁকে সাতবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে কোনোবারই সফলতা পায়নি ইসরায়েল।  

হামাসে যোগ দেওয়ার পর ৩০ বছরে সংগঠনটিতে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন মোহাম্মদ দেইফ। শেষ পর্যন্ত সামরিক প্রধানের দায়িত্ব পান। গাজায় হামাসের যে বিস্তৃত সুড়ঙ্গ রয়েছে, সেগুলো গড়ে তোলার পেছনে দেইফের হাত রয়েছে। সংগঠনটির সদস্যদের বোমা বানানোয় অভিজ্ঞ করে তুলেছেন তিনি। আত্মঘাতী বোমা হামলায় অনেক ইসরায়েলির মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয় দেইফকে।  

আজকের হামলার পর ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও চিত্র হাতে এসেছে রয়টার্সের। তাতে দেখা যায়, ধোঁয়া ও ধুলায় ঢেকে গেছে আল-মাওয়াসি এলাকা। সেদিকে ছুটে যাচ্ছে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স। প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে ছুটে পালাচ্ছেন নারী, শিশুসহ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, আজকের হামলায় অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন। আহত আরও ২৮৯ জন। ঘটনাস্থল থেকে এই হিসাবেরই যেন সত্যতা তুলে ধরছিলেন এক নারী। কাঁদতে কাঁদতে তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘সবাই মারা গেছে। আমার পরিবারে আর কেউ বেঁচে নেই। আমাদের সন্তানগুলোর শরীর টুকরা টুকরা হয়েছে। ওদের (ইসরায়েল) লজ্জা হওয়া উচিত।’

এদিকে আজকের হামলার মধ্য দিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে মোট ৩৮ হাজার ৪৪৩ জনের মৃত্যু হলো। একই সময়ে আহত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৪৮১ জন। এই হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

আরও পড়ুন