গাজায় নিহত ১৮ হাজার, ত্রাণ পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে ডব্লিউএইচওতে প্রস্তাব পাস
ফিলিস্তিনের গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক হামলা অব্যাহত রয়েছে। নির্বিচার এ হামলায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় ৬৫ দিনে গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা ১৮ হাজার ছুঁয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে, নিরবচ্ছিন্নভাবে ও অব্যাহত মানবিক ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ৩৪টি সদস্যদেশ নিয়ে গঠিত সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ড সর্বসম্মতভাবে গতকাল রোববার প্রস্তাবটি পাস করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা গতকাল টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আল-জাজিরাকে জানান, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৯৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫৫০ জনের বেশি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ সময় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। যদিও শুরুতে ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন বলে দাবি করেছিল ইসরায়েল। এ ছাড়া ২৪০ জনকে বন্দী করা হয়। ইসরায়েল পাল্টা হামলা শুরুর পর থেকে এ নিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজারে। আহত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৫০০ জন।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজার বহু আবাসিক ভবন ও স্থাপনা গুঁড়িয়ে গেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার কারণে এসব ভবনে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে কয়েক হাজার মরদেহ পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশু প্রায় ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে নিহত শিশুর সংখ্যাই ৭ হাজারের বেশি।
গাজার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। ইসরায়েলি হামলার কারণে সেখানকার ১৯ লাখ বাসিন্দাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ত্রাণের অভাবে এসব বাস্তুচ্যুত মানুষের অর্ধেকই অনাহারে রয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলা ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেখানকার বেশির ভাগ হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। অন্য হাসপাতালগুলো আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ বলে বর্ণনা করেছেন ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।