বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে থাকা লোকজনকে গুলি করে হত্যা

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশের পর উত্তর থেকে পালিয়ে দক্ষিণ গাজার দিকে যাচ্ছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলের নুসাইরাত শরণার্থীশিবিরে। ১১ জুলাই ২০২৪ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের গাজা নগরীর বাসিন্দাদের আবারও বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে থাকা লোকজনকে রাস্তায় গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। এমনকি রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহও উদ্ধার করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী।

একজন নারী বলেন, গাজা নগরীর শুজাইয়া শহরতলির ইয়ারমুক স্টেডিয়াম হয়ে তিনি এলাকা ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে বলা হয়, সেখানে ইসরায়েলি স্নাইপারদের গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ রাস্তায় পড়ে আছে।

ওই নারী বলেন, ‘আমরা মরদেহগুলো সরিয়ে নিতে প্যারামেডিক এবং ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের সহায়তা চাই। তাহলে অন্তত মরদেহগুলো রাস্তায় পড়ে থাকবে না। কারণ, মরদেহগুলো রাস্তা থেকে সরানো না হলে সেগুলো কুকুরে খাবে। মরদেহগুলো দাফন করা উচিত।’

তবে ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, মরদেহগুলোর কাছে পৌঁছাতে পারেননি প্যারামেডিকরা। তিনি বলেন, মরদেহগুলো উদ্ধারে তাঁরা (প্যারামেডিক) কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান। কেউ মরদেহগুলোর দিকে এগোলেই সরাসরি গুলি করা হচ্ছে।

কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ইসরায়েলি স্নাইপাররা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক ব্যক্তিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেন। পরে কয়েকজন মরদেহটি উদ্ধার করতে সমর্থ হন। একজন বাসিন্দা বলেন, ‘ওই লোক শান্তভাবে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর মাথায় একটি গুলি লাগে। পরে আমরা এগিয়ে গিয়ে মরদেহটি নিয়ে আসি।’

এদিকে গাজাজুড়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৩৮ হাজার ৩৪৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৮ হাজার ২৯৫ জন।

দ্বিচারিতা প্রত্যাখ্যানের আহ্বান পেদ্রোর

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার চলমান সংঘাত নিয়ে দ্বিচারিতা প্রত্যাখ্যান করতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে অন্য নেতাদের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে পেদ্রো বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের জনগণকে বলি, আমরা এ কারণেই ইউক্রেনকে সমর্থন করছি যে আমরা আন্তর্জাতিক আইন সুরক্ষা করছি। তাহলে ঠিক এই একই কাজটি আমাদের গাজার ক্ষেত্রেও করতে হবে।’

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ধারাবাহিক রাজনৈতিক অবস্থান থাকা উচিত, যেখানে আমাদের দ্বিচারিতা থাকবে না।’ অবিলম্বে এবং জরুরি ভিত্তিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির পরিবেশ তৈরি প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।