গাজার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিস এলাকায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে এলাকাটি ছেড়ে পালাচ্ছেন সবাই। জাতিসংঘের হিসাবে গত সোমবার নতুন করে হামলা শুরুর পর থেকে খান ইউনিস ছেড়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
চলতি বছরের শুরুতে খান ইউনিসে ব্যাপক হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। এরপর দিন কয়েক আগে ইসরায়েলি বাহিনীর জানায়, খান ইউনিস থেকে ইসরায়েলে রকেট ছোড়া বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেবে তারা। ওই ঘোষণার পরই নতুন হামলা শুরু করা হয়। খান ইউনিসের যেসব এলাকা নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানেও হামলা চালানো হচ্ছে।
হামলা শুরুর দিন সোমবার গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সেদিন ইসরায়েলের হামলায় খান ইউনিসে ৭০ জন নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক। বুধবার সেখানে উদ্ধার অভিযান চালায় ইসরায়েল। অভিযানে পাঁচ ইসরায়েলির মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটি। এরপরই খান ইউনিস থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গতকাল শুক্রবার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিনও খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে তুমুল লড়াই হয়েছে। স্থানীয় নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাসপাতালটিতে অন্তত ১৬ জনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।
এ পরিস্থিতিতে খান ইউনিস থেকে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চার দিনে ১ লাখ ৮২ হাজার ফিলিস্তিনি পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ। সংস্থাটির ভাষ্যমতে, নতুন করে ইসরায়েলের এ পদক্ষেপের মুখে খান ইউনিসে ত্রাণসরবরাহব্যবস্থা ‘অস্থিতিশীল’ হয়ে পড়েছে। সেখানে খাবার ও পয়োনিষ্কাশনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় গাজা যুদ্ধ। সেদিন দেশটিতে ঢুকে ১ হাজার ১৯৭ ইসরায়েলিকে হত্যা করেন হামাস যোদ্ধারা। এ ছাড়া ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। ইসরায়েল বলছে, সম্প্রতি উদ্ধার করা পাঁচজনের মরদেহ ৭ অক্টোবরের হামলার দিন ইসরায়েল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এদিকে হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। নৃশংস এ হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৯ হাজার ২৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯০ হাজার ৫৮৯ জন। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।