এবার হজের সময় প্রচণ্ড গরমের শঙ্কা, সতর্ক থাকার আহ্বান

মক্কার মসজিদুল হারামে বিশ্রাম নিচ্ছেন হজযাত্রী ও সাধারণ মুসল্লিরা। ৯ জুন, ২০২৪ছবি: রয়টার্স

আগামীকাল বৃহস্পতিবার মিনায় যাওয়ার মাধ্যমে হজের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তা চলবে ছয় দিন। হজের সময় মক্কার তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। ফলে হজ পালনকারীরা এবার বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন বলে সতর্কতা জারি করেছে সৌদির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

চলতি সপ্তাহে জারি করা ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এ বছর হজযাত্রীরা কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন। এর মধ্যে তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি অন্যতম।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ আল-আব্দুল্লাহিল বলেছেন, উচ্চ তাপমাত্রা হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সৌদি আরবে জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্রের পূর্বাভাস, হজের সময় মক্কার তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। তাপমাত্রা গরম থেকে অতি গরম থাকতে পারে। মক্কা ও পবিত্র স্থানগুলোর তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।

তাপমাত্রা বাড়ার পাশাপাশি হজের সময় তাপপ্রবাহ চলতে পারে বলেও সতর্ক করেছে দেশটির আবহাওয়া কেন্দ্র।

এ অবস্থায় হজযাত্রীদের তাঁদের দেওয়া নির্দেশনা মানতে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যেমন সরাসরি সূর্যের হাত থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার করা, পর্যাপ্ত পানি পান করা ও অজ্ঞান হওয়া কিংবা গরমের ক্লান্তি দূর করতে মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নেওয়া।

হজের সময় এবার হজযাত্রীরা হিটস্ট্রোকেও আক্রান্ত হতে পারেন বলে সতর্কতা জারি করেছে সৌদির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঠান্ডা স্থানে এনে পর্যাপ্ত তরল খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হজযাত্রীদের হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে সরাসরি রোদে না যেতে ও ভিড় এড়িয়ে চলতেও পরামর্শ দিয়েছে সৌদির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

হজে গিয়ে ১৫ বাংলাদেশির মৃত্যু

সৌদি আরবে এবার হজ পালন করতে গিয়ে স্বাভাবিক কারণে এখন পর্যন্ত ১৫ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও ১ জন নারী। মক্কায় মারা গেছেন ১১ জন ও মদিনায় ৪ জন। গত ১৫ মে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা যান।

মারা যাওয়া হজযাত্রীরা হলেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মো. আসাদুজ্জামান (৫৭), ভোলার মো. মোস্তফা (৯০), কুড়িগ্রামের মো. লুৎফর রহমান (৬৫), ঢাকার নবাবগঞ্জের মো. মুরতাজুর রহমান (৬৩), চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার মোহাম্মদ ইদ্রিস (৬৪), ঢাকার কদমতলির মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৮), কুমিল্লার মো. আলী ইমাম ভুঁইয়া (৬৫), কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মো. জামাল উদ্দিন (৬৯), কক্সবাজারের রামু উপজেলার মোহাম্মদ নুরুল আলম (৬১), কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাকসুদ আহমদ (৬১), ফরিদপুরের নগরকান্দার মমতাজ বেগম (৬৩), ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম (৫৭), গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মো. সোলাইমান (৭৩), রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার গোলাম কুদ্দুস (৫৪) ও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার শাহাজুদ আলী (৫৫)।

সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ পালন করতে গিয়ে মারা গেলে তাঁর মরদেহ সেখানেই দাফন করা হয়। নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তিও গ্রহণ করা হয় না। মক্কায় হজযাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারাম আর মদিনায় মারা গেলে মসজিদে নববিতে জানাজা হয়।