ইমোজির খেসারত ৬৬ লাখ টাকা
ইন্টারনেটে হরেক রকমের ইমোজি চোখে পড়ে। নানা অভিব্যক্তি প্রকাশে ব্যবহারকারীদের হামেশাই এসব ইমোজি ব্যবহার করতে দেখা যায়। এমন ইমোজি ব্যবহার করতে গিয়ে লাখ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে, এমন কথা হয়তো কেউ শোনেননি। কানাডায় কিন্তু এমন ঘটনাই ঘটেছে।
ঘটনা ২০২১ সালের। সে বছর খাদ্যশস্য কিনতে কানাডার সাসকাচুয়ান প্রদেশের কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সুইফট কারেন্টের দ্বারস্থ হন এক ক্রেতা। শস্য কিনতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে একটি খসড়া চুক্তিও করেন তিনি। এরপর ইন্টারনেটে ওই চুক্তিপত্রের একটি ছবি পাঠান সুইফট কারেন্টের মালিক ক্রিস আচটারের কাছে। আচটার ওই চুক্তিপত্র পেয়ে জবাবে শুধু একটি ‘থাম্বস আপ’ (বৃদ্ধাঙ্গুল উঁচিয়ে দেখানো) ইমোজি দেন।
সেখান থেকেই শুরু বিপত্তির। বলা হয়েছে, এই ইমোজি দিয়ে আচটার বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। আচটারের দাবি, থাম্বস আপ ইমোজি দিয়ে তিনি শুধু বুঝিয়েছিলেন, ওই চুক্তিপত্র হাতে পেয়েছেন। আর ইমোজি দেখে ওই ক্রেতা নাকি ভেবেছিলেন, আচটার ওই চুক্তিতে রাজি। সেই ভাবনা থেকে সুইফট কারেন্টের কাছ থেকে খাদ্যশস্য পাওয়ার আশায় ছিলেন তিনি। কিন্তু কয়েক মাস গড়িয়ে যায়। শস্য আর পান না। এরপরই তিনি দ্বারস্থ হন আদালতের।
আদালতে শুরু হয় আরেক নাটকীয়তা। থাম্বস আপ ইমোজির আসল অর্থ উদ্ধারে নেমে পড়ে দুই পক্ষ। বাদানুবাদ শেষে রায় যায় ক্রেতার পক্ষেই। রায়ে খাদ্যশস্য না পাওয়ার ক্ষতিপূরণ বাবদ সুইফট কারেন্টের মালিক আচটারকে ৬১ হাজার ৭৮৪ ডলার জরিমানা দিতে বলা হয়, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার অর্থমূল্য দাঁড়ায় ৬৬ লাখ টাকার বেশি।
আদালতে দুই পক্ষের বিবাদ মেটানোর দায়িত্বে ছিলেন বিচারক টি জে কেন। রায়ে তিনি বলেন, আগেও চুক্তি অনুমোদনের জন্য আচটার থাম্বস আপ ইমোজি ব্যবহার করেছেন। তাই এবারও তিনি একই উদ্দেশে এই ইমোজি দিয়েছিলেন বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে যে স্বাক্ষর করার দরকার ছিল, তা আচটার ও তাঁর মুঠোফোন থেকে পাঠানো থাম্বস আপ ইমোজির মাধ্যমে পূরণ হয়েছে।