জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল যে ১০ খাবার ও পানীয়

কোন কোন খাবার বা পানীয় আপনার নস্টালজিয়াকে উসকে দেয়, কেউ কেউ নতুন নতুন স্বাদের খাবার খোঁজেন। কখনো কখনো আমরা জনপ্রিয় খাবার বা পানীয় এমনকি অনলাইনে ভাইরাল স্বাদের কোনো খাবার খেতে হুমড়ি খেয়ে পড়ি। গুগল এ বছর ট্রেন্ডে থাকা শীর্ষ ১০ খাবার ও পানীয়র একটি তালিকা করেছে। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য সেসব খাবারের তালিকা তুলে ধরা হলো।

অলিম্পিক চকলেট মাফিন

এক্স থেকে নেওয়া ছবি

নরওয়ের সাঁতারু হেনরিক ক্রিস্টিয়ানসেন। এ বছর প্যারিস অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন। অলিম্পিক চলাকালে ভিলেজে খেলোয়াড়দের একধরনের চকলেট মাফিন কেক খেতে দেওয়া হয়েছিল। ওই চকলেট মাফিন কেক ক্রিস্টিয়ানসেনের এতটাই পছন্দ হয়েছিল যে ওই কেকের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছোট ছোট ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেন। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ ওই ভিডিও দেখেন।
ক্রিস্টিয়ানসেনের সঙ্গে সঙ্গে অলিম্পিক চকলেট মাফিন কেকও ভাইরাল হয়ে যায়। চিনি, তেল, ডিম, ভ্যানিলা এসেন্স, লবণ, ইনস্ট্যান্ট কফি পাউডার, কোকো পাউডার, ময়দা, বাটার এবং উষ্ণ গরম তরল দুধ মিলিয়ে এই কেকের গোলা তৈরি হয়। মাফিন কাপে গোলা ঢেলে ওভেনে কেক তৈরি হওয়ার পর গরম থাকা অবস্থায় একটি লম্বা সরু ছুরি দিয়ে কেকের মাঝখানটা চিরে ভেতরে ঢেলে দেওয়া হয় ক্রিম ও চকলেট মেশানো ঘন তরল।

টাংহুলু

টিকটক থেকে নেওয়া ছবি।

এটি একটি চীনা ক্যান্ডি। তাজা ফল ও ঘন তরল চিনি দিয়ে টাংহুলু তৈরি করা হয়। প্রথমে পছন্দ অনুযায়ী ছোট আকারের ফল যেমন আঙুর, স্ট্রবেরি বা কমলার কোয়া লম্বা চিকন কাঠিতে গেঁথে কয়েক ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। সেগুলো জমে যখন বরফের মতো শক্ত হয়ে যাবে, তখন চিনির গরম ঘন সিরায় ডুবিয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা হলেই তৈরি হয়ে গেল মুচমুচে মজাদার টাংহুলু।

টিনিস ম্যাক অ্যান্ড চিজ

টিনির টিকটক ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম টিকটকে রান্নার ভিডিও দেন তরুণী রাঁধুনি টিনি। টিকটকে তাঁর অনুসারী সংখ্যা ৫৫ লাখের বেশি। তাঁর ভাইরাল রেসিপি টিনিস ম্যাক অ্যান্ড চিজ। ছয় কোটির বেশি মানুষ তাঁর ম্যাক অ্যান্ড চিজ পাস্তা রান্নার ভিডিও দেখেছেন। ছোট আকারের পাস্তা এবং প্রচুর পরিমাণে পনির দিয়ে এই রেসিপি তৈরি করা হয়। সঙ্গে ব্যবহার করা হয় হেভি ক্রিম, দুধ এবং অল্প পরিমাণে নানা মসলার গুঁড়া।

আমের আচার

আমের মিষ্টি আচার
ছবি: প্রথম আলো

কাঁচা আম দিয়ে তৈরি নানা ধরনের টক, মিষ্টি বা ঝাল ঝাল আচার কার না ভালো লাগে। এ বছর গুগলের হিসাবে সবচেয়ে ট্রেন্ডি খাবারের তালিকায় ৪ নম্বরে আছে আমের আচার।

দুবাই চকলেট বার

তৈরি হচ্ছে দুবাই চকলেট বার
ফাইল ছবি: এএফপি

ঝড়ের গতিতে বিশ্বজুড়ে নিজের রাজত্ব বিস্তার করেছে দুবাই চকলেট বার। দারুণ মজার এই চকলেট বারের ভেতরে থাকে পেস্তাবাদামের মিহি পেস্ট ও তাহিনিতে মাখানো মুচমুচে কাটাইফি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় বিখ্যাত এই কাটাইফি। সেমাইয়ের মতো দেখতে কাটাইফি বাটারে হালকা আঁচে বাদামি এবং মুচমুচে করে ভেজে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো পেস্তাবাদামের পেস্ট ও তাহিনিতে মাখানো হয়। চকলেট মোল্ডে প্রথমে মোটা করে তরল চকলেটের একটি স্তর ঢালার পর সেটি কয়েক মিনিট ফ্রিজে রাখতে হয়। ফ্রিজ থেকে বের করে কাটাইফি মিশ্রণ ভেতরে দিয়ে ওপরে আরেক স্তর চকলেট। ফ্রিজে ২০ মিনিট রেখে মোল্ড থেকে বের করে খেয়ে ফেলুন মজাদার দুবাই চকলেট। নানা ফ্লেভারে এই চকলেট পাওয়া যায়।

ডেনস বিন সালাদ

টিকটক থেকে নেওয়া ছবি

স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয় একটি খাবার ডেনস বিন সালাদ। এটির প্রস্তুত প্রণালিও বেশ সহজ। নানা ধরনের সিদ্ধ ছোলা, মটরশুঁটি বা শিমের বিচি; সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজকুঁচি, শসার টুকরা, বেসিল, পুদিনা বা ধনেপাতার মতো তাজা ভেষজ পাতা, অলিভ ওয়েল, লেবুর রস, সামান্য লবণ দিয়ে তৈরি করে ফেলা যায় মজাদার ডেনস বিন সালাদ। এর সঙ্গে নিজের পছন্দ মতো আরও কিছু সালাদ তৈরির উপকরণ আপনি মিশিয়ে নিতেই পারেন। একই সঙ্গে মজাদার এবং পুষ্টিকর এই খাবারের চাহিদা তাই বিশ্বজুড়ে।

চিয়া পানি

বেশির ভাগ মানুষ চিয়া সিড রাতভর ভিজিয়ে রেখে সকালে খান। এতে বীজটি বেশি পানি শোষণ করে আরও আঠালো, পিচ্ছিল ও থকথকে হয়
ছবি: ফ্রি পিক

বীজজাতীয় যেকোনো খাবারই পুষ্টিকর। এসবের মধ্যে ২০২৪ সালে অন্যতম আলোচিত নাম চিয়া সিড। বিশেষ করে ওজন কমাতে চিয়া সিড বিশ্বজুড়ে জননন্দিত। পুষ্টিকর এই উদ্ভিজ্জ বীজ শরীরে শক্তি জোগায়। মাত্র ২ চামচ চিয়া সিডে যে পরিমাণ ফাইবার থাকে তা একজন মানুষের দিনের প্রয়োজনের প্রায় অর্ধেক মেটাতে সক্ষম। সকালের নাশতায় ২ চা-চামচ চিয়া সিড খেলে তা পরবর্তী ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা আপনার পেট ভরা থাকার অনুভূতি দেবে। পানিতে এক ঘণ্টার বেশি ভিজিয়ে রেখে আপনি পান করতে পারেন চিয়া ওয়াটার বা চিয়া পানি। স্বাদ বাড়াতে মেশাতে পারেন লেবুর রস বা সামান্য মধু।

স্লিপি গার্ল মকটেল

টিকটক থেকে নেওয়া ছবি

এটাও টিকটকে ভাইরাল হওয়া একটি রেসিপি। সাধারণত যাঁদের রাতে ঘুমের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এই মকটেলকে জাদুকরি বলা হয়। এটি তৈরিতে খুব বেশি উপকরণের প্রয়োজন পড়ে না। চাই শতভাগ চেরির রস, ম্যাগনেশিয়াম পাউডার এবং প্রিবায়োটিক সোডা। একটি ককটেল গ্লাসে বরফ, চেরির রস এবং ম্যাগনেশিয়াম পাউডার ঢেলে ১০-১৫ সেকেন্ড খুব ভালো করে ঝাকাতে হবে। এরপর একটি গ্লাসে ঢেলে সেটির ওপর আস্তে আস্তে ঢেলে দিতে হবে প্রিবায়োটিক সোডা। ঠান্ডা ঠান্ডা এক গ্লাস স্লিপি গার্ল মকটেল পান করে হারিয়ে যান ঘুমের রাজ্যে।

লেমন বাম

টিকটক থেকে নেওয়া ছবি

পুদিনাপাতার মতো দেখতে লেবুর সুগন্ধযুক্ত ভেষজ পাতা লেমন বাম। উদ্বেগ কমাতে এবং মন চাঙা করতে এই পাতার রসের জুড়ি মেলা ভার। হৃদ্‌যন্ত্র এবং মানবদেহের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্যও এই পাতার রস উপকারী। ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোয় সাধারণত লেমন বাম গাছ দেখা যায়। যদিও ভেষজ গুণের কারণে সারা বিশ্বেই এখন ওই উদ্ভিদের চাষ হচ্ছে। পুদিনাপাতার মতো চা অথবা নানা ধরনের পানীয়তে লেমন বাম ব্যবহার হয়।

১০

ভাইরাল শসার সালাদ

টিকটক থেকে নেওয়া ছবি

টিকটকে শসার সালাদ তৈরি করে রীতিমতো তারকা বনে গেছেন লোগান মোফিট। এ বছর জুলাইয়ে তিনি শসা দিয়ে একটি সালাদ তৈরি করে অনলাইন সেনসেশনে পরিণত হন। তিনি খোসাসহ শসা গ্রেটারে পাতলা চাক চাক করে কেটে নেন। তারপর কুচি করে কাটা পেঁয়াজ, গ্রেট করা রসুন, পাপড়িকা, সামান্য লবণ এবং সঙ্গে পছন্দ মতো কখনো ক্রিম, কখনো মেয়োনেজ, কখনো পিনাটবাটার মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন মজাদার কিউকামবার সালাদ। জুলাইয়ে তাঁর শসার সালাদ ভাইরাল হওয়ার পর তিনি একমাস ধরে শুধু শসার সালাদের নানা রেসিপি দেখিয়ে গেছেন বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।