২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

হিজাব–শুনানি চলছে, ওআইসি চাইছে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ

ফাইল ছবি

কর্ণাটক হাইকোর্টে হিজাব–বিতর্কের নিষ্পত্তি মঙ্গলবারও হয়নি। প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থির বেঞ্চ এই বিতর্কের অবসানে নতুন কোনো অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশও দেননি। যদিও আবেদনকারীদের আরজি, ছাত্রীদের ইউনিফর্মের রঙের মানানসই কাপড়ের তৈরি হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া হোক। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলোতেও হিজাব পরার রেওয়াজ রয়েছে। বুধবারও শুনানি চলবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের পর হিজাব–বিতর্কে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ করল ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো–অপারেশন’ (ওআইসি)। সংগঠনের মহাসচিব হুসেন ইব্রাহিম তাহির গত সোমবার জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছেন এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।

হিজাব যে ভেদাভেদ বা অশান্তি সৃষ্টি করে না, আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে না, বরং এটি যে এক নিরীহ ধর্মাচরণ, কর্ণাটক হাইকোর্টে মঙ্গলবার আবেদনকারীদের আইনজীবীরা সওয়াল জবাবে বারবার তা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, হিজাব পরার কারণে ঐক্য বিঘ্নিত হয় না। সমতা বিনষ্ট হয় না। আইনশৃঙ্খলার অবনতিও ঘটে না। তা ছাড়া সরকারও এখন পর্যন্ত ইউনিফর্ম নীতি তৈরি করেনি। এই পরিস্থিতিতে হিজাবসংক্রান্ত যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ রাজ্য সরকার দিয়েছে, তা বদলের আরজি জানানো হয়। সেই নির্দেশ মেনে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হিজাব পরে শিক্ষালয়ে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। আজ রাজ্যের কলেজও খুলে যাচ্ছে।

আইনজীবী দেবদত্ত কামাথ মঙ্গলবারের শুনানির সময় দক্ষিণ আফ্রিকা ও কানাডার দুই আদালতের দুটি রায়ের প্রতি বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার আদালত সেখানকার এক স্কুলের এক দক্ষিণ ভারতীয় হিন্দু ছাত্রীকে নাকছাবি পরে স্কুলে আসার অনুমতি দিয়েছিলেন। কানাডার আদালত এক শিখ ছাত্রকে কৃপাণ নিয়ে ক্লাস করার অনুমতি দিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি জানতে চেয়েছিলেন এর আগে রাজ্যে হিজাব পরে ছাত্রীরা স্কুলে আসত কি না। উত্তর হলো, বহুদিন ধরেই তারা এভাবে আসছে। কখনো কোনো গোলমাল হয়নি। স্কুলের শৃঙ্খলাও কখনো ভঙ্গ হয়নি। তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধান সদর্থক ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের পর হিজাব বিতর্কে এবার যোগ দিল ওআইসি। ওআইসির মহাসচিব হুসেন ইব্রাহিম তাহির সোমবার জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছেন এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।

উত্তরাখন্ডের হরিদ্বার থেকে হিন্দুত্ববাদের প্রবর্তকদের মুসলিম নিধনের ডাক দেওয়ার ঘটনায় ওআইসির টুইটারে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমান মহিলাদের হেনস্তা এবং একই সঙ্গে কর্ণাটকে মুসলমান ছাত্রীদের হিজাব পরতে বাধা দেওয়ার ঘটনাতেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ওআইসি এর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের মতো আন্তর্জাতিক মহলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আরজি জানিয়েছে। ওআইসি একই সঙ্গে ভারতকেও বলেছে, মুসলমান সমাজের নিরাপত্তা ও মঙ্গলে সচেষ্ট হয়ে মুসলমানদের ব্যবহারিক জীবন রক্ষা করতে উদ্যোগী হতে।