যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আচার্যকে 'প্রাক্তন' সম্বোধন ছাত্র সংসদের
>চিঠিতে জগদীপ ধনখড়কে ‘প্রাক্তন আচার্য’ সম্বোধন করে ছাত্র সংসদ লিখেছে, ‘আপনার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে থাকার যোগ্যতা নেই। আমরা আপনাকে এই আচার্যের পদ থেকে বহিস্কার করেছি।’ যদিও এই সাংবিধানিক পদ থেকে তাঁকে বহিস্কারের এখতিয়ার ছাত্র সংসদের নেই।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া এক চিঠিতে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ লিখেছে ‘আপনার সাধারণ জ্ঞান অসন্তোষজনক। তর্কের ক্ষমতাও খারাপ। ইতিহাসজ্ঞান শুন্য। সব মিলিয়ে আপনি মেরুদণ্ডহীন।’রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় পদাধিকার বলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।
চিঠিতে জগদীপ ধনখড়কে ‘প্রাক্তন আচার্য’ সম্বোধন করে ছাত্র সংসদ লিখেছে, ‘আপনার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে থাকার যোগ্যতা নেই। আমরা আপনাকে এই আচার্যের পদ থেকে বহিস্কার করেছি।’ গতকাল ছাত্র সংসদের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আচার্যকে চিঠি দেওয়া হয়। যদিও এই সাংবিধানিক পদ থেকে তাঁকে বহিস্কারের এখতিয়ার ছাত্র সংসদের নেই।
পদাধিকার বলে ধনখড় আচার্য হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন তাঁর বিরুদ্ধেই আন্দোলনে নেমেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ বর্তমানে বামপন্থী সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইর দখলে। সম্প্রতি ছাত্র সংসদের নির্বাচনে এসএফআই জয়ী হয়।
মূলত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে না পারার অভিযোগে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠে। শিক্ষার্থীদের দাবি, আচার্য ধনখড় মূলত বিজেপির হয়ে কথা বলছেন। ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসির) পক্ষ অবলম্বন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা তাঁর ওপর ক্ষুদ্ধ হয়। ফলে এই আচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে যাদবপুরের শিক্ষার্থীরা।
গত ২৪ ডিসেম্বর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল সমাবর্তন উৎসব। সেই উৎসবে তিনি আচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা তাঁকে দেড় ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে আটকে রাখে। ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান তুলে তাকে দেখানো হয় কাল পতাকা। শেষ পর্যন্ত আচার্য বাধ্য হন বিশ্ববিদ্যায় ছাড়তে। তবে ওই দিন আচার্য ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষ হয়। তবে এই অনুষ্ঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কৃতী ছাত্রী দেবস্মিতা চৌধুরী ডিগ্রি নিতে গিয়ে ক্ষোভে ছিড়ে ফেলেন নাগরিক সংশোধনী আইনের প্রতিলিপি। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী এসেছিলেন ’নো এনআরসি, নো সিএএ’ লেখা ও ‘গো–ব্যাক ধনখড়’ ব্যাজ পরে। ঘোষণা দিয়েছিল জগদীপ ধনখড়ের হাত থেকে তাঁরা ডিগ্রি নেবেন না।
এই ঘটনার আগের দিন ২৩ ডিসেম্বর ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট কমিটির বৈঠক। সেই বৈঠকে আচার্য ও রাজ্যপাল ধনখড়ের যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে শিক্ষার্থীরা তাঁকে আটকে রেখে কাল পতাকা দেখায়। গো-ব্যাক ধ্বনি প্রদান করে। অগত্যা বাধ্য হয়ে তিনি ফিরে যান রাজভবনে।