নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মিছিল বের করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এবার এই আইনের পক্ষে মিছিল বের করেছে ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হওয়ার খুশিতে দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি আয়োজন করে ‘অভিনন্দন যাত্রা’।
কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কয়ার থেকে আজ দুপুরে এই অভিনন্দন যাত্রা শুরু হয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে শ্যামবাজারে শেষ হয়। এই যাত্রায় অংশ নেন বিজেপির সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডা। আরও যোগ দেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, রাহুল সিনহা, দিলীপ ঘোষ, দেবশ্রী চৌধুরী প্রমুখ। অভিনন্দন যাত্রা শেষে আয়োজিত সমাবেশে জেপি নাড্ডাসহ বিজেপির নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তব্যে নেতারা বলেন, ভারতে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসি—সবাই একসঙ্গে আছেন এবং থাকবেন। কেবল বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব সংখ্যালঘু নির্যাতিত হয়ে ভারতে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনের কারণে কোনো ভারতীয় মুসলিমকে ভারত ছাড়তে হবে না।
এদিকে আজ দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জগদীপ ধনখড় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে যোগদান করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাজ্যপালকে কালো পতাকা দেখিয়ে এবং ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে এনআরসি এবং সিএএ বাতিলের দাবি জানান। এ সময় তাঁরা রাজ্যপালকে উপাচার্য হিসেবে না মানার ঘোষণা দেন। এভাবে প্রায় ৫০ মিনিট রাজ্যপালের গাড়ি আটকে রাখার পর শর্তসাপেক্ষে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। রাজ্যপাল নিরপেক্ষভাবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে আরএসএস এবং বিজেপির হয়ে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হয়ে তাঁদের প্রশ্নের জবাব দেন রাজ্যপাল।
এনআরসি এবং সিএএর প্রতিবাদে কলকাতা ও হাওড়ায় প্রতিবাদ মিছিল বের করেছে তৃণমূলও। কলকাতার বিধাননগর কলেজ থেকে এই প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়ে করুণাময়ীতে শেষ হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগর পৌরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, তৃণমূল নেতা তাপস রায় প্রমুখ। হাওড়া থেকে বের হওয়া মিছিলে নেতৃত্ব দেন কলকাতা পৌরসভার মেয়র ও রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
অন্যদিকে বাম ঘরানার রাজনৈতিক দল সিপিএমের ছাত্রসংগঠন এসএফআইয়ের ডাকে আজ কলকাতায় দুটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। একটি মিছিল শুরু হয় শিয়ালদহ থেকে আর অন্যটি শুরু হয় হাওড়া স্টেশন থেকে। দুটি মিছিলেই সিএএ ও এনআরসি বাতিলের দাবি ওঠে। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।