বাবরি মসজিদের নিচে রামমন্দিরের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর (এএসআই) মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল বলে দাবি করেছেন দুই প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ। হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় ভার্মা ও জয়া মেনন বলেছেন, ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের নিচে রামমন্দির থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে সম্প্রতি তাঁরা ওই সাক্ষাৎকার দেন।
হাফিংটন পোস্ট ডটইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ যেখানে বাবরি মসজিদ ছিল, সেখানে খননকাজ চালায়। পরে তারা এলাহাবাদ হাইকোর্টকে জানায়, মসজিদের নিচে তিনটি রামমন্দিরের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা।
সুপ্রিয় ভার্মা ও জয়া মেনন দাবি করেছেন, এএসআইয়ের দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল।
সুপ্রিয় ভার্মা জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং মেনন শিব নাদার ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের প্রধান। তাঁরা সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষে খননকাজ পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাঁরা খননকাজে পাওয়া তথ্য নিয়ে ২০১০ সালে ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলিতে নিবন্ধ লিখেছিলেন।
সুপ্রিয় ভার্মা ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকায় খননকাজে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা চাপের মধ্যে ছিলেন। তাঁদের আসলে বাধ্য করা হয়েছিল মন্দিরের পক্ষে বলতে। অনুসন্ধানের নেতৃত্বে ছিলেন বি আর মানি, যাঁকে এলাহাবাদ হাইকোর্ট দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার মানিকে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক পদে বসায়।
সুপ্রিয় ভার্মার মতে, বাবরি মসজিদের নিচে পুরোনো ছোট মসজিদ ছিল। এর পশ্চিম পাশের দেয়াল, ৫০টি পিলার ও স্থাপত্যশৈলী তারই প্রমাণ। পশ্চিম পাশে দেয়াল দেখলেই বোঝা যায় যে এই পাশে মুখ করে নামাজ পড়া হয়েছে। এর কাঠামো মসজিদের মতো, মন্দিরের মতো নয়।