পাইলটের ভুলে বিপিনের কপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়
ভারতের প্রতিরক্ষাপ্রধান বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী যে কপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছিল, তাতে পাইলটের ভুল ছিল বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভিকে গতকাল বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সূত্রটি।
গত ৮ ডিসেম্বর বিপিনকে বহনকারী কপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় তামিলনাড়ুতে। এতে বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকাসহ ১৪ জন নিহত হন। এরপর এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এই তদন্ত কমিটি গতকাল প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে তাদের তদন্তের তথ্য–উপাত্তগুলো জমা দিয়েছে।
তবে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
পাইলটের যে ভুলের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, একে সিএফআইটি (কন্ট্রোল্ড ফ্লাইট ইনটু টেরেইন) বলা হয়ে থাকে। যখন কোনো উড়োজাহাজ উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত ও নিরাপদ থাকে এবং তা পাইলটের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকে, তখন ভূখণ্ড, পানি বা কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খেলে তা সিএফআইটি বলে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সিএফআইটির এক ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে। এ ব্যাখ্যায় বলা হয়, কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ না হারিয়েই ভূখণ্ড, পানি বা কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খায় উড়োজাহাজ। একই ধরনের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।
সূত্র বলেছে, যখন ওই দুর্ঘটনা ঘটে তখন, আকাশ মেঘলা ছিল। বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, এটি উড্ডয়নের জন্য নিরাপদ ছিল।
বিপিন রাওয়াতকে যে হেলিকপ্টার বহন করেছিল, সেটি ভারতীয় বিমানবাহিনীর অন্যতম নির্ভরযোগ্য হেলিকপ্টার। শুধু সামরিক কর্মকর্তা নয়, দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এমআই-১৭ভি৫ হেলিকপ্টার ব্যবহার করে থাকেন।
এনডিটিভির দেওয়া তথ্য অনুসারে, রাশিয়া থেকে হেলিকপ্টারটি আমদানি করা হয়েছিল। তবে ভারতের জন্য এটি বিশেষভাবে নকশা করে তৈরি করা হয়ছিল। ২০১২ সালে ভারতের বিমানবাহিনীতে হেলিকপ্টারটি যুক্ত হয়। দেখতে এ হেলিকপ্টার পুরোনোর মতো মনে হলেও কাজে বেশ আধুনিক। এই হেলিকপ্টারে যে রাডার রয়েছে, তা দিয়ে চারপাশের ৬০০ কিলোমিটারে আবহাওয়া সম্পর্কে জানা যায়। এতে ব্যবহার করা হয় দুটি ইঞ্জিন।
এমআই-১৭ভি৫ হেলিকপ্টারটি নজরদারি ও শত্রুর ওপর হামলা চালাতেও ব্যবহার করা হয়। এ হেলিকপ্টার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পর্যন্ত নিক্ষেপ করা যায়। মেশিনগানের মতো অস্ত্রও ব্যবহার করা হয় হেলিকপ্টারটিতে।