তৃতীয় জরিপেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মমতার জয়ের ইঙ্গিত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচন নিয়ে এবিপি-আনন্দ এবং সি-ভোটার পরিচালিত তিনটি জনমত জরিপেও তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
জরিপগুলো বলছে, তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির তীব্র লড়াই হলেও শেষমেশ জিতবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। আবারও সরকার গড়বে তারা। আর মমতাই হবেন রাজ্যটির তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী।
এবিপি-আনন্দ এবং সি-ভোটারের তৃতীয় দফা ও সর্বশেষ নির্বাচনী জনমত জরিপের ফলাফল আজ মঙ্গলবার কলকাতার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত এই জরিপে রাজ্যের ১৯ হাজার ৩১৪ জন ভোটার নিজেদের মতামত দেন। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনে তৃণমূল পেতে পারে ১৫০ থেকে ১৬৬টি আসন। আর বিজেপি পেতে পারে ৯৮ থেকে ১১৪টি আসন। বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট পেতে পারে ২৩ থেকে ৩১টি আসন। আর অন্যরা পেতে পারে ৫টি আসন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় রয়েছে ২৯৪টি আসন। রাজ্য সরকার গড়তে এখানে প্রয়োজন ১৪৮টি আসন। সেই হিসাবে বলা চলে, এবারের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। ফলে বিপুল ভোটে জিততে পারবে না তৃণমূল বা বিজেপি কেউই। তবে জরিপের হিসাবমতে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত দ্বিতীয় জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, তৃণমূল পেতে পারে ১৪৮ থেকে ১৬৪টি আসন। বিজেপি পেতে পারে ৯২ থেকে ১০৮টি আসন আর বাম-কংগ্রেস জোট পেতে পারে ৩১ থেকে ৩৯টি আসন। তবে তৃতীয় দফা জরিপে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের আসন বেড়েছে। বেড়েছে বিজেপির আসনও। তবে কমেছে বাম-কংগ্রেস জোটের আসন।
গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রথম দফা জরিপে বলা হয়েছিল, তৃণমূল পেতে পারে ১৫৪ থেকে ১৬২টি আসন। বিজেপি পেতে পারে ৯৮ থেকে ১০৬টি আসন। আর বাম-কংগ্রেস জোট পেতে পারে ২৬ থেকে ৩৪টি আসন। তৃতীয় দফায় দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল এবং বিজেপির আসন বাড়লেও কমেছে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের আসন।
এই জরিপে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, তৃণমূল পেতে পারে ৪৩ শতাংশ ভোট। আর বিজেপি ৩৭.৫ শতাংশ এবং বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট পেতে পারে ১১.৮ শতাংশ ভোট। ৪২ শতাংশ ভোটার মনে করেন এবার তৃণমূল জিতবে। ৩৯ শতাংশ মনে করেন বিজেপি জিতবে। আর বিধানসভা ঝুলন্ত বা ত্রিশঙ্কু হবে মনে করেন মাত্র ২ শতাংশ ভোটার।
সর্বশেষ জরিপে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতাকে পছন্দ করেছেন ৫২ শতাংশ ভোটার। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষকে পছন্দ করেছেন ২৭ শতাংশ, বিজেপির নেতা মুকুল রায়কে ৭ শতাংশ, কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী এবং সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে ২ শতাংশ ভোটার পছন্দ করেছেন।
পাশাপাশি এবারের নির্বাচনে কোন বিষয়টি ভোটারদের মধ্যে বেশি প্রভাব ফেলবে, এই প্রশ্নের জবাবে ২৯ শতাংশ ভোটার বলেছেন, মমতার দুয়ারে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মুসলিম ভোট ভাগাভাগি। ২৫ শতাংশ ভোটার এ কথা বলেছেন। তৃতীয় স্থানে, তৃণমূলের অভ্যন্তরে বিদ্রোহ। ১৯ শতাংশ ভোটার এমনটা বলেছেন। আবার ৪ শতাংশ ভোটার মত দিয়েছে সারদা, নারদে অভিযুক্তদের বিজেপিতে নেওয়া, ৪ শতাংশ ভোটারের মত, বাম-কংগ্রেস জোটের প্রভাব এবং ৫ শতাংশ ভোটারের মতে জাতীয়তাবাদ বনাম আঞ্চলিকতাবাদের প্রভাবকে।